বিএনপি নেতা নোমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া: চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশ স্থগিত

বর্ষীয়ান রাজনীতিক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম অর্থাৎ স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে পারেন- দীর্ঘদিন এমন আলোচনা চললেও শেষ পর্যন্ত হতে পারেননি তিনি। তাই শোকাহত নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ীদের কেউ কেউ এই প্রসঙ্গ তুলেও আক্ষেপ প্রকাশ করছেন।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে মারা গেছেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান। সাতসকালে তার মৃত্যুর খবর শুনে অনেকে তার ধানমন্ডির বাসায় চলে যান।

আবদুল্লাহ আল নোমানের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন।

তার মৃত্যুর খবর শুনে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পোস্ট করেছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে উত্তর জেলা বিএনপির মঙ্গলবার সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। যেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নেওয়ার কথা ছিল আব্দুল্লাহ আল নোমানের। কিন্তু কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আগেই পরপারে পাড়ি জমালেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। ফলে আব্দুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সমাবেশ স্থগিত করেছে বিএনপি।

বিএনপির এই নেতার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জানা গেছে, জাতীয় শহীদ দিবস উপলক্ষে বনানীতে বিডিআর বিদ্রোহে নিহতদের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি আছে বিএনপির। যেখানে বিএনপি মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতাদের যাওয়ার কথা রয়েছে৷ কিন্তু দলের সহযোদ্ধার মৃত্যুতে কবর জিয়ারতের আগেই নোমানের বাসায় যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল্লাহ আল নোমান। দ্বিতীয়বার ২০০১ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর মৎস্য মন্ত্রণালয় এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আবদুল্লাহ আল নোমানের রাজনীতির শুরুটা ষাটের দশকে। হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি যোগ দেন ছাত্র ইউনিয়নে। মেননপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ছাত্রজীবন শেষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন। গোপনে ভাসানীপন্থী ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত হন। ১৯৭০ সালে তাকে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমে তিনি ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে ১৯৮১ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত ছিলেন।