কুয়েটে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চবিতে বিক্ষোভ মিছিল

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে শাখা ছাত্রদল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় চবি শাখা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলকে উদ্দেশ্য করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান তোলেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরাও কুয়েট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ করছিলেন। তখন তিন পক্ষের মুখোমুখি উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

এদিন, রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইনকিলাব মঞ্চ একত্রে মিছিল করে। অন্যদিকে, ছাত্রদলও শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন।

তবে, ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ ধ্বনিকে গুপ্ত সংগঠনের কাক বলে মন্তব্য করেন চবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, রাত সাড়ে ৯টায় আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে গুপ্ত সংগঠনের সদস্যরা আমাদের উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা উদ্ভুত পরিস্থিতি সামলে শহীদমিনারে গিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ সম্পন্ন করেন।

এদিকে, কর্মসূচি চলাকালীন ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন চবি ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব তামান্না খান। তিনি তার এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, আমাদের কর্মসূচি শুরু হওয়ার পূর্বে ১৫/২০ জন জিরো পয়েন্টে একত্রিত হয়েছিলাম। পূর্ব থেকেই সেখানে আরো ক্রাউড ছিল। প্রোগ্রাম চলাকালীন স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় চবি ইনকিলাব মঞ্চ তার প্রোগ্রাম সমাপ্ত ঘোষণা করে। একই সঙ্গে কুয়েটে ছাত্র-শিক্ষদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চায় ইনকিলাব মঞ্চ।

অন্যদিকে, ছাত্রদলকে লক্ষ্য করে পেছন থেকে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুয়োধ্বনি দিয়েছেন চলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চবির সহ-সমন্বয়ক রশীদ দিনার। তিনি বলেন, কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় চবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এসময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে জিরো পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় পেছন থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটা অংশ দুয়োধ্বনি দেয়। তবে, উভয়পক্ষের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হই আমরা।

চবির সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, কুয়েটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইনকিলাব মঞ্চ তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা চবির জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন। এসময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা স্টেশন চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে জিরো পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় তিন পক্ষের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলে তিন পক্ষের সিনিয়ররাই বিষয়টিকে সুন্দরভাবে সামাল দেন।

তিনি আরও বলেন, এরপর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে শহীদমিনার চলে যান এবং বাকি দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা তাদের মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী মোড়ের দিকে চলে যান। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

উল্লেখ্য, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে ছাত্রদলের দাবি তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে মুখোমুখি বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।