সব বাহিনীকে আধুনিক করে গড়ে তোলা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

বাইরের শক্তির মোকাবেলায় দেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীকে আধুনিক প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতিমালার ভিত্তিতে আমরা ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছি। তারই ভিত্তিতে আমরা প্রত্যেকটা বাহিনীকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের নৌবাহিনীতে সাবমেরিন যুক্ত হয়েছে। এভিয়েশন সিস্টেম যুক্ত হয়েছে। এখন আমাদের নৌ-বাহিনী ত্রিমাত্রিক।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামস্থ নৌ জেটিতে বানৌজা সংগ্রামের কমিশনিং অনুষ্ঠান এর শুভ উদ্বোধনীতে এসব কথা বলেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে নৌ বাহিনীর ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনকে বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে নৌ বাহিনীর সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। অনেকেই জীবন দিয়েছেন। এত সীমিত জিনিসে তারা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন।তখনকার সময় সেটা চিন্তা করা যায় না।

দেশের সমুদ্রসীমা অর্জন ও তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশাল সমুদ্রসীমা নিয়ে আমাদের সমস্যা ছিল। জাতির পিতা তা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য ৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন তারা এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি। আমার মনে হয় এ বিষয়ে তারা জানতোই না। প্রথমবার সরকারে আমি এসে এ ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করি। দ্বিতীয়বার আমাদের সমুদ্রসীমার অধিকার অর্জন করার জন্য আমি উদ্যোগ নেই। দুই প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ঠিক রেখেই আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে আমরা আমাদের সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। এই সমুদ্রসীমার রক্ষা করা, সমুদ্র সম্পদ কাজে লাগানো এবং অর্থনীতিতে কিভাবে সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করব। সেটাই আমাদের প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। আমরা শান্তি চাই- এটা যেমন সত্য। আবার যদি কেউ আমাদের উপর হামলা করে সেটা যেন আমরা যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারি। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলতে চাই। সেভাবে আমাদের সশস্ত্রবাহিনীকে আমরা প্রস্তুত রাখছি। আমাদের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে যেন আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন হয়। এই সমুদ্রসীমা রক্ষার জন্য আমাদের নৌবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন। আমরা সেটা করছি।

নিজেকে টেকনোলজি জানার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের নিজেদেরকেও শিখতে হবে, প্রস্তুত হতে হবে, টেকনোলজি জানতে হবে। আমরা যেন আগামীতে নিজেরাই জাহাজ তৈরি করতে পারি। প্রয়োজনে এক্সপোর্ট করতে পারি। সেই চিন্তাটাও মাথায় থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকভাবেই। কিন্তু হঠাৎ বিশ্বব্যাপী এক অদৃশ্য অশুভ শক্তি করোনাভাইরাস এর আক্রমণে সমস্ত বিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে। অর্থনীতি স্থবির। যাতায়াত স্থবির। সবকিছুই স্থবির হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ থেকে শুরু করে সবকিছুতেই একটা ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে কেউ লড়াই করতে পারছে না। অতি শক্তিধর অস্ত্রধারী দেশ হোক বা অতি অর্থনীতির শক্তিশালী দেশ হোক। অথবা একেবারে দরিদ্র বা উন্নত স্বল্পোন্নত দেশ হোক। সকলেই এখন একই অবস্থায় পড়ে গেছে। আমরা চাই এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাবো। সারা বিশ্বই মুক্তি পাক। আমরাও যেন মুক্তি পাই। ইনশাল্লাহ এই করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাংলাদেশ একদিন মুক্তি পাবে। সারাবিশ্ব মুক্তি পাবে। আবার মানুষ সামাজিক জীবনে ফিরে আসবে।