নগরের প্রায় ৩০% মানুষ জলবায়ু বাস্তুচ্যুত

ইপসার আয়োজনে চট্টগ্রাম শহরে জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষের বসবাস, তাদের অভিযোজন ও নগর উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
স্থ্ায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসার আয়োজনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে স্থানচ্যুত মানুষের গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন, অভিযোজন এবং নগর উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা জনাব শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। ইপসার প্রধান নির্বাহী জনাব মো. আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল সারোয়ার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এর প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আব্দুল্লাহ আল ওমর এবং বন ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা জনাব মঈনুল ইসলাম জয় প্রমুখ।
ইপসার গবেষনা কর্মকর্তা মোরশেদ হোসেন মোল্লার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইপসার পরিচালক নাসিম বানু এবং মূল গবেষনা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইপসার পরিচালক জনাব মোহাম্মদ শাহজাহান। তাঁর প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল- Unraveling the Nexus of Climate-Forced Displacement and Rural-to-Urban Migration in Bangladesh: Impacts, Adaptation Strategies, and Policy ResponsesÕ । তিনি বলেন ইপসা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে অবস্থিত বস্তিতে এই গবেষনা কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং ২০০টি বস্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনে স্থানচ্যুত মানুষের বসবাসের সন্ধান পেয়ে প্রায় ৫০০ পরিবারের মাঝে এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। চট্টগ্রামের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৫-৩০% জলবায়ু উদ্বাস্তু মানুষ দেশের বিভিন্ন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দূর্গত স্থান থেকে এসে বসবাস করছে এবং বিভিন্ন ধরণের দূর্যোগের শিকার হয়ে এক বস্তি থেকে অন্য বস্তিতে বসবাস করে থাকে। এছাড়া বস্তিকেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও নগর উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন ধরনের নীতিমালা রয়েছে যার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে বস্তিবাস্তীদের জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব হবে।
বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট নগর উন্নয়ন গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল সারোয়ার বলেন টেকসই নগর উন্নয়নের সরকারী প্রশাসন, বেসরকারী সংস্থা, গবেষক, পেশাজীবি উন্নয়ন সংস্থা, নগরের বসবাসরত মানুষ, সাংবাদিকবৃন্দ সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়ত অপরিহার্য। প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের কোন উন্নয়ন পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে তথ্যের অপ্রতুলতা একটি বিরাট সমস্যা। ইপসা চট্টগ্রাম নগরের বস্তিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে যে গবেষনা করেছে তা তথ্যপূর্ণ এবং ভবিষ্যতে নগর উন্নয়নে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমরা জানি চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পাহাড়ের পাদদেশে, রেললাইনের ধারে এবং বিভিন্ন স্থানে বসবাস করা ভাসমান মানুষ। তাদের জন্য ইপসার প্রস্তাবিত সুপারিশমালাসমূহ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জন্য তথ্য ভান্ডার হিসেবে কাজ করবে।
ইপসার প্রধান নির্বাহী জনাব মো. আরিফুর রহমান বলেন, ইপসা তৃণমূল জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সবসময়ে কাজ করে থাকে। এই গবেষনার মাধ্যমে প্রাপ্ত বস্তির মানুষের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী ও শিশুর সমস্যা, অভিযোজন ব্যবস্থাসমূহ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।