চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মাদক বিক্রিতে প্রতিবাদ করায় শাশুড়িকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে জামাতার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় শনিবার (১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে নিহতের মেয়ের স্বামী মোবারক হোসেনকে স্থানীয়রা আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
এর আগে শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলার ১২ নম্বর খৈয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের চেয়ারম্যান বাংলো এলাকা থেকে গলায় দড়ি পেঁচানো অবস্থায় সবুরা খাতুনের (৭২) মরদেহ উদ্ধার করে মিরসরাই থানা পুলিশ। তিনি উপজেলার পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের মৃত মাওলা বক্সের স্ত্রী।
এ ঘটনায় বোনের স্বামী মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন নিহতের ছেলে ওবায়দুল হক।
ওবায়দুল হক বলেন, ‘আমরা এক ভাই ও দুই বোন। আমার মা বেশ কয়েক বছর ধরে পূর্ব খৈয়াছড়া এলাকায় আমার ছোট বোন নাছিমা আক্তারের বাড়িতে থাকতেন। নাছিমার স্বামী মোবারক হোসেন (৪০) একজন মাদকাসক্ত।
তার বাড়ি উপজেলার হাইতকান্দি ইউনিয়নের মধ্যম কুরুয়া এলাকায় হলেও তিনি পূর্ব খৈয়াছড়ার পাহাড়ি এলাকায় বন বিভাগের জায়গায় থাকতেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এলাকায় ছিঁচকে চুরি ও মাদকাসক্তির কারণে বেশ কয়েকবার মোবারককে এখান থেকে বিতাড়িত করে গ্রামের লোকজন। দুই মাস আগে তার ছেলেদের অনুরোধে আবার এলাকায় আসার সুযোগ পান তিনি। কিন্তু আসার পর আবারও মাদকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন।
এ নিয়ে ঘরে আমার বোন ও মায়ের সঙ্গে প্রায় ঝগড়াঝাটি হত তার। মাদকাসক্তি ও ঘরের মানুষদের সঙ্গে ঝামেলার বিষয়ে প্রতিবাদ করলে আমার মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এর জেরে শুক্রবার বিকেলে মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে আমার মাকে গলায় গরুর দড়ি পেঁচিয়ে হত্যা করে পাশের একটি ঝোপে ফেলে চলে যান।’
আমার মায়ের কানে ও গলায় থাকা সোনার গহনাগুলোও নিয়ে যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরে রাত ১০টার দিকে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে আমার এক প্রতিবেশীর ফোনে আমার মাকে হত্যার বিষয়টি জানান মোবারক হোসেন। একইসঙ্গে আমাদের পরিবারের আরো লোকজনকে হত্যার হুমকি দেন।
পরে শুক্রবার রাতভর খুঁজেও মায়ের হদিস পাইনি। শনিবার ভোরে বাড়ির পাশের একটি ঝোপে আমার মায়ের মরদেহ দেখতে পাই আমরা। বিষয়টি মিরসরাই থানা পুলিশকে জানালে আজ সকালে এসে তারা মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যান।’
মিরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, ‘শনিবার রাত ৯টার দিকে এলাকাবাসী বৃদ্ধার মেয়ের জামাই মোবারক হোসেনকে স্থানীয়রা বড়তাকিয়া বাজারে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসার পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’