গত ১৮ জানুয়ারি (শনিবার) বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন, চট্টগ্রাম মহানগর শাখা কর্তৃক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার দেয়ালসংলগ্ন কমরেড সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি মোছা ও অবমাননার পরিপ্রেক্ষিতে নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে বিকেল ৪ টায় একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে ২ নম্বর গেইট পর্যন্ত ঘুরে পুনরায় ষোলশহর রেলস্টেশনে এসে সমাপ্ত হয়।
বিকেল ৪ টার দিকে বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের কর্মী-সংগঠকেরা ষোলশহর রেলস্টেশনে জড়ো হয়ে, সারিবদ্ধভাবে কিছু প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে সমাবেশ শুরু করে বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি রাকিব উদ্দিন, মহান কমিউনিস্ট নেতা সিরাজ সিকদারকে নিয়ে এবং শ্রমিক-কৃষক মেহনতী মানুষের আন্দোলনে পরিচিত কিছু স্লোগান দিয়ে ষোলশহর রেলস্টেশন মুখরিত করে। বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক ঈশা দে এর সঞ্চালনায় সমাবেশ শুরু হয়, এবং তারই আহ্বানে একে একে কর্মী-সংগঠকেরা বক্তব্য রেখে যান। বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি রাকিব উদ্দিন এর বক্তব্য রাখার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শেষ হয়।
বক্তারা বলেন, কমরেড সিরাজ সিকদার এদেশের শ্রমিক-কৃষক মেহনতী মানুষের মুক্তির লড়াইয়ের প্রধান নেতৃত্ব। তারই মাধ্যমে ১৯৬০ এর দশকে এদেশে বিপ্লবী কমিউনিস্ট রাজনীতির সূচনা হয় এবং তার নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত জনগণের জন্য তার নেতৃত্বে তার পার্টি লড়ে গেছেন। বাংলাদেশ আমলে, প্রথম বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হন তিনি, তার রুশ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ ও তাদের দালাল আওয়ামী-শেখ মুজিব শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ সংগ্রামের কারণে। আজকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ৫০ বছরেও শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা পাওয়া এই মহান নেতাকে জনগণ এখনো স্মরণ করে, যার নজির পাওয়া গিয়েছিলো জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ভারতের দালাল, ফ্যাসিবাদী শেখ মুজিবের গ্রাফিতি তুচ্ছ করে তার গ্রাফিতি অঙ্কন করার মধ্য দিয়ে। তবুও, একটি বামপন্থী ছাত্র-সংগঠনের নেতার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া একটি বক্তব্যের কারণে, তথাকথিত শেখ মুজিব বা মুজিববাদ বিরোধী আরেক ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি মুছে দেয় এবং জুতা নিক্ষেপ করে অবমাননা করে। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, যারা এমন ন্যক্কারজনক কাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা না আওয়ামী-শেখ মুজিব বিরোধী না কোন ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি, বরং তারা তাদের দোসরই। বক্তারা হুঁশিয়ারি করে আরো বলেন, সিরাজ সিকদারকে এমনভাবে অবমাননাকারীদের অবশ্যই জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে এবং এর শাস্তি ভোগ করতে হবে। কারণ, জনগণের মুক্তির লড়াইয়ে আমৃত্যু অটুট এই বিপ্লবীকে অপমান করা এই দেশের শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রামে চপেটাঘাত করার সামিল। বক্তারা বলেন, সিরাজ সিকদার যে সংগ্রাম শুরু করেছিলো, তা এখনো শেষ হয়নি, এবং সাম্যবাদ পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলমান থাকবে।
সমাবেশ শেষে মিছিলে মুখরিত করে ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে ২ নং গেইট পর্যন্ত একটি মিছিল যায়। এবং পুনরায় ষোলশহর এসে তার সমাপ্তি ঘোষণা করে রাকিব উদ্দিন।