২০১৫ বিশ্বকাপে অভিষেক হয় আফগানিস্তানের। গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয়া দলটি সেবার একটি ম্যাচ জিতেছিল। ২০১৯ আসরে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি আফগানরা। ২০২৩ বিশ্বকাপ শুরুর আগেও আফগানিস্তানের সম্ভাবনা নিয়ে খুব বেশি চর্চা হয়নি। তবে ওয়ার্ল্ডকাপ শুরুর পর ভিন্ন দৃশ্যপটই দেখা গেলো। রাউন্ড রবিন লীগে চার জয় পাওয়া আফগানিস্তান হারিয়ে দেয় ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো চ্যাম্পিয়ন দলগুলোকে। দুর্দান্ত আফগানিস্তান সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। বিশ্বকাপে ছাপ রাখা দলটির অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদির ভাষ্য, এই বিশ্বকাপ থেকে অনেক কিছু শিখেছে তারা। যা ভবিষ্যতে কাজে দেবে।
শুক্রবার আহেমদাবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়েছিল আফগানিস্তান।
দলীয় ১১৬ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি। তবে বিপদ সামলে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের অপরাজিত ৯৭* রানে ভর করে ২৪৫ রানের টার্গেট দেয় আফগানরা। যদিও তা যথেষ্ট হয়নি। ১৫ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয় আফগানিস্তানের। ম্যাচ শেষে আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আনন্দিত আমি। প্রত্যেক ম্যাচেই আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছি। কিছু দুর্দান্ত ম্যাচ খেলেছি আমরা। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে এমন অনেক কিছু শিখেছি আমরা।’
২০২৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয় পায় আফগানিস্তান। সেই ম্যাচে ইংলিশদের ২৮৫ রানের টার্গেট দিয়ে ৬৯ রানের জয় তুলে নেয় আফগানরা। পাকিস্তানের দেয়া ২৮৩ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটের জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কাকে হারায় ৭ উইকেটে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও পায় ৭ উইকেটের জয়। ব্যাটারদের নান্দনিক পারফরম্যান্সের প্রশংসা করে অধিনায়ক শহীদি বলেন, ‘বিশ্বকাপে ব্যাটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি গর্বিত। আসর শুরুর আগেও আমরা ধুঁকছিলাম। আমরা একসঙ্গে হই এবং নিজেদের দুর্বলতা নিয়ে কথা বলি। শেষ পর্যন্ত আপনারা দেখেছেনই ব্যাটাররা কতোটা ভালো খেলেছে। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত এটি।’
শহীদি বলেন, ‘সবাই জানে আমাদের স্পিনাররা খুব ভালো। ব্যাটাররা যেভাবে খেলেছে, এই ছন্দ ধরে রাখতে পারলে আমরা ভালো করব। আমরা বিশ্বকে আমাদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছি। বড় দলগুলোর বিপক্ষে ভালো খেলেছি আমরা, ম্যাচ হারলেও শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছি।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল আফগানিস্তান। ২৯২ রানের টার্গেট দিয়ে মাত্র ৯১ রানে অজিদের ৭ উইকেট ফেলে দিয়েছিল দলটি। তবে শেষে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য ডাবল সেঞ্চুরিতে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। হাশমত বলেন, ‘এমনকি অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটিও আমাদের হাতে ছিল, কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে সব শেষ হয়ে যায়। আমি হতবাক হয়ে যাই, তবে সেই ম্যাচ থেকেও অনেক কিছু শিখেছি আমরা।’