আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন পেলো ‘নগদ’

নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন পেলো ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক লেনদেন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’। প্রাথমিক অনুমোদন পাওয়া এ প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়েছে ‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’।

প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এলওআই (লেটার অফ ইন্টেন্ট) কিছু শর্তসাপেক্ষ অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে ৩৫টিতে দাঁড়ালো।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪২৪তম বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।

দেশের মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান (সাবসিডিয়ারি) হতে হয়। কিন্তু নগদ কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারি নয়। তাই তারা এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পায়নি। মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এখন প্রাথমিক অনুমোদন পেলো নগদ। সুতরাং এখন থেকে সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সারাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালনা করবে নগদ।

নগদ ছাড়াও দেশের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আরও ১৩ প্রতিষ্ঠান। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বার্ষিক লেনদেন এমএফএস-এ ১৯.৮৯ শতাংশ বেড়ে ৯৪ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবের (অ্যাকাউন্ট) সংখ্যা ১৮ কোটি ৮৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪২টি। এজেন্ট সংখ্যা ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৬৬৫টি।

গত রোববার (২৮ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ থেকে একটা বিষয় লক্ষ্য করে আসছি, নগদের সাফল্যে একটি মহল বরাবরই নাখোশ। যেখানে নগদের কারণে দেশের মোবাইল আর্থিক সেবার মান বেড়েছে এবং খরচ গত এক দশকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। সেখানে কার স্বার্থে আঘাত লাগছে সেটি অনুমেয়? যেখানে নগদের কারণে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের কোটি কোটি মানুষ অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে আসতে পারলো, যার ফলে আজ দেশের নারী-শিশু-বয়স্ক-বিধবাসহ নিম্নআয়ের মানুষ ঘরে বসে সব ধরনের সরকারি ভাতা পাচ্ছেন শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে। তাহলে এতে কার ক্ষতি হলো?

তিনি বলেন, এটি স্পষ্ট করে বলা দরকার যে নগদের জন্য ডাক বিভাগের কোনো ক্ষতি হয়নি বা হবেও না। ডাক বিভাগের সেবা হিসেবে নগদ তার জাতীয় দায়িত্ব পালন করছে। অনুগ্রহ করে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না বা গুজবে কান দেবেন না।

এদিকে ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাহেল আহমেদ চলতি মাসের ১ আগস্ট অব্যাহতি নেন। প্রধান নির্বাহী হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি নিজেই নগদ এমএফএস থেকে অবসর নেন। দেশের অন্যতম সেরা ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানিতে যোগদানের আগে সর্বশেষ তিনি প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নগদ ফাইন্যান্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগদান করতে পারেন বলে জানা গেছে।