স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে ধাক্কা দিতে হবে: আ জ ম নাছির

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, চট্টগ্রামে আওয়ামী রাজনীতির ঘরানার অভিভাবক হিসেবে মরহুম ইসহাক মিয়ার দোয়া ও আশীর্বাদ যারা পেয়েছেন তাদের মধ্যে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবে না।

রোববার (২৪ জুলাই) দুপুরে নগরের আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে সাবেক গণপরিষদ সদস্য, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ ইসহাক মিয়ার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গুলজার কমিউনিটি সেন্টারে এক স্মরণানুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

আ জ ম নাছির বলেন, ইসহাক মিয়া যোগ্য নেতাকর্মীদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। কঠিন সময়ে পরামর্শ দিয়েছেন। নিজের জীবনকে অর্থ-বিত্তে সমৃদ্ধ করার সুযোগ থাকার পরও সেদিকে তিনি নজর দেননি। তিনি নজর দিয়েছিলেন সংগঠনের প্রতি এবং দলীয় আদর্শিক উত্তরাধিকারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আ জ ম নাছির বলেন, দলে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের স্থান নেই। যাদের যোগ্যতা আছে, দক্ষতা আছে এবং জনকল্যাণে যারা সম্পৃক্ত তারা অবশ্যই নেতৃত্ব অর্জনের যোগ্যতা রাখেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সাবেক মেয়র আরও বলেন, মনে রাখতে হবে আমাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমে। যদি তা আমরা না করি তাহলে প্রতিপক্ষই ফায়দা লুটবে। এই প্রতিপক্ষ তারাই যারা এখনো বাংলাদেশকে স্বীকার করে না এবং পাকিস্তানী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। এদের কেউ কেউ দলের ভিতরে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে পারে। তাদেরকে ধাক্কা দিতে হবে। তা না হলে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি আমাদেরকে পেছন দরজা দিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দেবে এবং সারা জাতিকে জিম্মি করে রাখবে। আমরা যারা দেশপ্রেমিক তারা অবশ্যই এই পরিস্থিতিকে মেনে নিতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, সারা জাতি যখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন একটি অপশক্তি এই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশি-বিদেশি কুচক্রীদের মাধ্যমে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই ধরনের বহু ষড়যন্ত্র অতীতে মোকাবিলা করেছে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরাই এই ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছে। আমাদের প্রয়াত জননেতা মুহাম্মদ ইসহাক মিয়া তার জ্বলন্ত সাক্ষী হয়ে আমাদের মাঝে চিরদিন অমলিন হয়ে থাকবেন।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মরহুম ইসহাক মিয়া ব্যক্তি হিসেবে মানবিক এবং রাজনীতিক হিসেবে একটি কঠিন ইস্পাত দৃঢ় প্রতিরোধের শক্তি। দলের কঠিন দুঃসময়ে তিনি সবসময় কর্মীদের নিয়ে মাঠে থেকে সুসঙ্গত করেছেন। আদর্শিক প্রশ্নে তিনি কখনো আপোস করেননি। একজন বড় মাপের নেতা হয়েও তিনি ছিলেন কর্মীবান্ধব। তাই তাঁকে স্মরণ করার মধ্য দিয়ে আমরা যারা নেতা তাদেরকে কর্মীদের অন্তর স্পর্শ করতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা সফর আলী, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মাহবুবুল হক মিয়া, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, থানা আওয়ামী লীগের হারুনুর রশিদ, হাজী মো. ইলিয়াছ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আব্দুল হান্নান, সৈয়দ মো. জাকারিয়া, আব্দুল আজিজ মোল্লা, কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক ও মরহুমের সন্তান মো. রিদুয়ান প্রমুখ।

এদিকে রোববার (২৪ জুলাই) সকাল দশটায় মরহুম মুহাম্মদ ইসহাক মিয়ার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগ্রাবাদস্থ পারিবারিক কবরস্থানে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন সহ নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।