ভোলায় প্রথম বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ

ভোলায় গত ৪ বছর পরীক্ষামূলক চাষের পর প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে বেবি তরমুজ চাষ করা হয়েছে। এটি বর্ষায় চাষযোগ্য তরমুজ। এই তরমুজের বীজ বপনের মাত্র দুই মাসে ক্ষেতে কম খরচে বেশি ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। বাজারে বাচ্চা তরমুজের চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় খুশি চাষিরা। এদিকে এ বছর কৃষকদের সফলতা দেখে আরও বেশি সংখ্যক কৃষক এ জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৬ সালে একটি এনজিওর উদ্যোগে ভোলা জেলায় প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ছানা বা রেইন তরমুজ চাষ করা হয়। এরপর আরো ৩ বছর পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ চাষ করেন কৃষকরা। ভোলা সদর, দৌলতখান, চর ফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার কৃষকরা এ বছর বাণিজ্যিকভাবে ব্ল্যাক বেবি ও সুপার কুইন জাতের তরমুজ চাষ করছেন।

দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড জয়নগর গ্রামের কৃষক মো. সালাউদ্দিন জানান, এ বছর তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ করে বেবি বা বর্ষা তরমুজ চাষ করেছেন। মাঠে ব্যাপক ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত দুইবার তিনি ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায়। ক্ষেতে বর্তমান ফলন থেকে আরও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের ১নং কৃষক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, তিনিও এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে বেবি বা বর্ষা তরমুজ চাষ করেছেন। ক্ষেতে রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ খুবই কম। বপনের ৬০ দিনের মধ্যে তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে। এ জাতের তরমুজের চাহিদা বেশি থাকায় বাজারদরও অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আমি খুচরা বাজারে 100 থেকে 120 টাকায় একটি তরমুজ বিক্রি করতে পারি।

এ বছর এ তরমুজ বেশি চাষ করে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন। আগামীতে তিনি বাণিজ্যিকভাবে আরও জমিতে বেবি বা বর্ষা মৌসুমের তরমুজ চাষ করবেন।

কৃষক মো. স্বপন জানান, তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেন এবং একজন কৃষক তার পাশের জমিতে বর্ষায় তরমুজ চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন। ওই কৃষকের কাছ থেকে বর্ষায় তরমুজ চাষের কৌশল শিখেছেন তিনি। আগামী বছর তিনি ২ থেকে ৩ একর জমিতে বর্ষা তরমুজ চাষ করবেন।

ভোলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবির জাগো নিউজকে বলেন, ভোলা জেলায় চার থেকে পাঁচ বছর ধরে বেবি বা বর্ষা তরমুজ চাষ হচ্ছে। তবে এ বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে এ জাতের তরমুজের চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। বাজারে এ জাতের তরমুজের চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়া কৃষি বিভাগ কৃষকদের তরমুজ চাষে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে।

তিনি আরো জানান, এ বছর ভোলা জেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে বেবি বা বর্ষা মৌসুমে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। আগামীতে এর আবাদ বহুগুণ বাড়বে বলে তিনি দাবি করেন।