রোহিঙ্গাদের মাঝে ‘ফণী’ আতংক

কক্সবাজারে বন বিভাগের (দক্ষিণ) সাড়ে ৫ হাজার একর বনভূমির পাহাড়ের উপর আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় ফণী আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেহেতু রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গাদের ঝুঁপড়িঘর গুলো পাহাড়ের চুঁড়ায়, ঢালুতে এবং পাদদেশে অবস্থিত। এ ছাড়া ক্যাম্প এলাকায় রোহিঙ্গাদের দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য কোন আশ্রয় কেন্দ্র নির্মিত হয়নি এই পর্যন্ত। ঘুর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানলে ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পরিণতি কী হবে এ নিয়ে চিন্তিত বিশাল এই জনগোষ্টি।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জি ডি-৪ ব্লক-৩৯ এর আবদুর রহমানের ছেলে জাহিদ আলম (২৫) বলেন, ক্যাম্পে ঘুর্ণিঝড় সম্পর্কে মাইকিং করা হচ্ছে। ঝুঁকি দেখে আমাদের ২৫ পরিবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘুর্ণিঝড় উপলক্ষে কোন ধরণের শুকনো খাবার বা উপকরণ কিছু পায়নি এখনো।
রোহিঙ্গা যুবক রিয়াজুল করিম বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো সাইক্লোন শেল্টার নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার মতো স্থান নেই। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে অধিকাংশ রয়েছে নারী-শিশু। তিনি বলেন, কিছু কিছু ঝুপঁড়ি পাহাড়ের চুঁড়ায়, ঢালুতে, পাদদেশে। বাতাসের গতিবেগে ঝুপড়ি গুলো মুহুর্তেই উড়ে যেতে পারে। পাহাড়ধ্বস হলে বড় ধরণের প্রাণহানির আশংকা করছেন এই যুবক।
এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, স্থানীয়দের পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফণী মোকাবেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ পূর্ববর্তী সময়ে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের ভেতরে অবস্থিত মসজিদ, স্কুল ও আশপাশের স্থানীয় সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে অবস্থান নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগে অবহেলা না করে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিংসহ নানাভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরাও সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে। উপজেলা কন্ট্রোল থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ পুরো এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ঘুর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ মো: ইমদাদুল হক জানিয়েছেন, উখিয়া উপজেলায় স্থানীয়দের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দূর্যোগ মোকাবেলায় ১টি রেসকিউ টিম ও ১টি ফাষ্ট এইড টিম গঠন করা হয়েছে।