রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ক্যান্সার প্রতিরোধী বিদেশী ফল “সাওয়ারসপ”

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই।
“সাওয়ারসপ বা টক আতা” (করোসল) একটি বিশেষ ঔষধী গুণের ফল। এই ফলের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আমেরিকায় হলেও সারা বিশ্বে এর কদর দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে এটা ক্যান্সার প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলটি সুস্বাদু। ফল হিসেবে অথবা পাতা বা বাকলের রস চা’য়ের মত খেলে দেহে ক্যান্সার সেল বৃদ্ধি হতে দেয়না। টক আতা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের জনপ্রিয় ছোট অ্যান্টি ক্যান্সার ঔষধি বৃক্ষ হিসাবে ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ফলটি-অঞ্চল ভিত্তিক ভিন্ন নামেই সমাদৃত। গ্র্যাভিওলা, (Graviola), সোরসপ, গুয়ানাভা বা ব্রাজিলিয়ান পাও পাও। করোসলের কমন নাম: “soursop”, “prickly custard apple” এবং বৈজ্ঞানিক নাম: Annona muricata ।
পার্বত্যাঞ্চলের কৃষি বিপ্লবের বাতিঘর হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীন কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী পাহাড়ী আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে এই ফলের চাষ করে সফলতা অর্জন করেছে এখানকার বিজ্ঞানিরা।
এই গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ আলতাফ হোসেন জানান, গত ৪ বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এই গাছের চারা এনে গবেষণা কেন্দ্রে লাগানো হয়। গত ২ বছর ধরে গাছ গুলোতে ফল ধরছে। এই কেন্দ্রের ২৫ টি গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ টি ফল ধরে এবং প্রতিটি ফলের ওজন এক কেজির মতো হয়।
তিনি আরো জানান, এই ফল সাধারণত জুন-জুলাই মাসে ধরে। যেহেতু এটি একটি ক্যানসার প্রতিরোধক ফল হিসাবে বিশ্বে পরিচিত, তাই অনেকে এসে কেন্দ্র থেকে এই ফল এবং এরপাতা সংগ্রহ করে নেয়। তবে বানিজ্যিক ভাবে এখনো এই ফলের বাজার মূল্য নির্ধারীত না হলেও অচিরেই এটি এদেশে বানিজ্যিক ভাবে এরবিস্তার লাভ করবে বলে আমরা মনে করি।
এই ফলের স্বাদ গ্রহনকারী কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, এই ফলের চিত্র ও বীজ আতা ফলের মতই। আর স্বাদটা অনেকটা মিক্সড মনে হয়েছে। আমাদের দেশী কাঁঠাল, টকলিচু, আম, আতা আর আপেলের পেস্ট একসাথে খেলে যেমন লাগবে এফলের স্বাদ ঠিক তেমনি মনে হয়েছে আমার কাছে। এগাছের পাতার সেদ্ধ পানি নিয়মিত খেলে ব্লাড সুগার কমায়, হাইপারটেনশন থেকেও নাকি মুক্তি মেলে আর শরীরকে তরতাজা রাখে।