সফল মিসাইল উৎক্ষেপণ করলো বাংলাদেশ নৌবাহিনী

বঙ্গোপসাগরে সফল মিসাইল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজগুলোর বার্ষিক সমুদ্র মহড়া ‘এক্সারসাইজ সেফ গার্ড-২০২১’ সম্পন্ন হয়েছে।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে বানৌজা সমুদ্র অভিযান থেকে সমাপনী দিবসের মহড়াগুলো প্রত্যক্ষ করেন।

এ সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধান অতিথি জাহাজে এসে পৌঁছালে কমান্ডার বিএন ফ্লিট কমডোর মীর এরশাদ আলী স্বাগত জানান এবং নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল জাহাজে প্রধান অতিথিকে ‘গার্ড অব অনার’ দেন।
১৫ দিনব্যাপী এ মহড়ায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফ্রিগেট, করভেট, ওপিভি, মাইন সুইপার, পেট্রোল ক্রাফট, মিসাইল বোটসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাহাজ। নৌবাহিনীর মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ও হেলিকপ্টারও প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। এ ছাড়াও, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, সেনা ও বিমানবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট মেরিটাইম সংস্থাগুলো এ মহড়ায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। ৪টি ধাপে অনুষ্ঠিত এ মহড়ার উল্লেখযোগ্য দিকগুলোর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিল নৌবহরের বিভিন্ন কলাকৌশল অনুশীলন, সমুদ্র এলাকায় পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, লজিস্টিক অপারেশন, ল্যান্ডিং অপারেশন, উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত নৌ স্থাপনাগুলোর প্রতিরক্ষা মহড়া।

নৌবাহিনীর এ বার্ষিক মহড়ার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল সমুদ্র এলাকায় দেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ, সমুদ্রসম্পদের হেফাজত, সমুদ্রপথের নিরাপত্তা বিধানসহ চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, উপকূলীয় এলাকায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সমুদ্র এলাকায় প্রহরা নিশ্চিত করা। চূড়ান্ত দিনের মহড়ার উল্লেখযোগ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে মিসাইল উৎক্ষেপণ, বিমানবিধ্বংসী গোলাবর্ষণ, সাবমেরিন বিধ্বংসী রকেট ডেপথ চার্জ নিক্ষেপণ, ভিবিএসএস ও নৌকমান্ডো মহড়া এবং নৌযুদ্ধের বিভিন্ন কলাকৌশল।

মহড়া সফল সমাপ্তির পর প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কর্মকর্তা ও নাবিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তিনি সফল মহড়ার জন্য নৌ সদস্যদেরকে অভিনন্দন জানান এবং নৌ সদস্যদের পেশাগত মান, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন এবং সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করেন। দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতি ও যেকোনো দুর্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় প্রত্যন্ত এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তাসহ জনসাধারণকে যে মানবিক সহায়তা দিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

নৌ মহড়ার সমাপনী দিনে অন্যান্যের মধ্যে নৌ সদর দফতরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণ, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল, কমান্ডার বিএন ফ্লিটসহ স্থানীয় উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।