বাল্যবিয়ে দিয়ে দেবে বলে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে

সীতাকুণ্ড থানার ছোট কুমিরা মছজিদ্দা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে দুই ছাত্রী পালিয়েছিল। তারা লতিফা সিদ্দিকা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী।

এসএসসি পরীক্ষার পর তাদের বাবা-মা জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দিয়ে দেবে বলে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে বলে র‌্যাবকে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের মা সীতাকুণ্ড থানায় পৃথক দুটি জিডি করেন।

 

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট নিয়াজ মোহাম্মদ চপল।

সীতাকুণ্ড থানার জিডির সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ নভেম্বর সকালে উপজেলার দক্ষিণ মছজিদ্দা মাস্টারপাড়ার ফোরক মিস্ত্রির বাড়ির এক ছাত্রী ও  ছোট কুমিরা ৩ নম্বর ওয়ার্ড মছজিদ্দা এলাকার স্বপন মল্লিকের বাড়ির এক ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষা দিতে ছোট কুমিরা মছজিদ্দা উচ্চবিদ্যালয়ে যায়। তারপর থেকে তারা দুজন আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। এক ছাত্রীর মা জানান, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে তার বালিশের নিচে একটি চিটি লিখে রেখে গেছে। সেটিতে বলা হয়েছে আমি চলে যাচ্ছি আর আসব না।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট নিয়াজ মোহাম্মদ চপল জানান, সীতাকুণ্ড এলাকার দুই স্কুল ছাত্রী চলে যাচ্ছি আর আসবো না চিরকুট লিখে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়।  দীর্ঘ এক মাস ছাত্রীদের কোনো খোঁজখবর পাওয়া না যাওয়ায় ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এরই সূত্রে ধরে র‌্যাব-৭, ছাত্রীদের উদ্ধারের জন্য ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি চালায়।

তিনি জানান, আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ছাত্রীদের কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানাধীন বাগুরা শান্তিনগর এলাকায় অবস্থান করছে। রোববার রাত পৌনে ১১টায়  এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।

এসএসসি পরীক্ষার পর তাদের বাবা-মা তাদেরকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দিয়ে দেবে বলে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে বসবাস করে আসছে জানিয়ে নিয়াজ মোহাম্মদ চপল জানান, ছাত্রীরা আরও লেখা পড়া করে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের স্বাবলম্বী করে নিজ পায়ে দাঁড়াতে চায়। মূলত তারা উচ্চশিক্ষিত হয়ে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর জন্যই বাল্যবিয়েকে পরিহার করে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।