গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা শুরু

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সাজেশন চাইলে ইনবক্সে নক করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতির বেশকিছু গ্রুপে এই ধরনের স্ট্যাটাসের দেখা মিলছে। সাজেশন চেয়ে ‘সুমন এম এস’ নামে পোস্টদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন আলিফ হাসান। আলিফের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অগ্রিম দুই হাজার ও পরীক্ষায় কমন পড়বার পর ৮ হাজার টাকা। তবে আলিফের কাছে দুই হাজার টাকাটা পাবার পরেই ব্লক করে দেয়া হয় ফেসবুক এবং মোবাইল নম্বরও। দুই হাজার টাকার বিনিময়ে মেলেনি কোনো সাজেশন।
সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে দীর্ঘদিনের আলোচনার। ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শুরু হলো
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমদিন অংশ নেবেন বিজ্ঞান (ক ইউনিট) বিভাগের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে প্রশ্নের বিজ্ঞাপন। তবে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলছে প্রশাসন।
গত কয়েক বছর ধরেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করে আসছিলো। কিন্তু নানা জটিলতায় তা হয়ে ওঠেনি। ২০২০ সালে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে একমত হলেও হয়নি পরীক্ষা। প্রতীক্ষার প্রহর শেষে আজ রোববার শুরু হচ্ছে নতুন অধ্যায়। ২৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে এই পরীক্ষায়। আসন প্রতি লড়বেন ১১ পরীক্ষার্থী। এবার বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগসহ তিনটি ইউনিটে রয়েছে মোট ২২ হাজার ১৩টি আসন। এর বিপরীতে আবেদন করেছেন দুই লাখ ৩২ হাজার ৪৫৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে এক লাখ ৩১ হাজার ৯০১ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৬৭ হাজার ১১৭ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ৩৩ হাজার ৪৩৭ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
পরীক্ষার প্রশ্ন হবে উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে। এতে মোট ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়া হবে। বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে বাংলায় ১০, ইংরেজিতে ১০, রসায়ন ২০, পদার্থবিজ্ঞান ২০, আর বাকি ৪০ নম্বর থাকবে আইসিটিতে। মানবিক বিভাগের ক্ষেত্রে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ ও আইসিটিতে ২৫ নম্বর; বাণিজ্য বিভাগের ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানে ২৫, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনায় ২৫, বাংলায় ১৩, ইংরেজিতে ১২ ও আইসিটিতে ২৫ নম্বর থাকবে। এ ছাড়া পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর।
ভোগান্তি কমানোর এই পরীক্ষা পদ্ধতিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সর্বমহলের মানুষ। তবে বিভাগ পরিবর্তনকারী ইউনিট, সিলেকশন প্রথার কারণে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী হয়েছেন মনক্ষুণ্ন। তারা দাবি জানাতে করেছেন আন্দোলন। আর দাবি আদায়ে গিয়েছেন আদালতেও।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন বলেন, পরীক্ষাগুলো সুষ্ঠুভাবে নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমে আসবে। আমাদের প্রত্যাশা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতি ঠেকাতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি। পরীক্ষার সময় কেন্দ্র এবং কেন্দ্রের বাইরে বিভিন্ন টেকনিক্যাল টিম পর্যবেক্ষণে থাকবে।