জাতীয় শোক দিবসে চুয়েট পরিবারের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে চুয়েট পরিবার। আজ ১৫ আগস্ট (রবিবার), ২০২১ খ্রি. সকাল ০৯.১০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শোকের প্রতীক কালো ব্যাজ ধারণ, কালো পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচীর শুরু হয়। চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর সংলগ্ন জাতির পিতার ম্যুরাল প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড.ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী এবং চুয়েটে মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রনজিৎ কুমার সূত্রধর। এরপর বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, সেন্টার চেয়ারম্যানগণ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি ও স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় স্মারক বৃক্ষরোপণ করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে চুয়েট কর্তৃক আয়োজিত দিনের কর্মসূচীর দ্বিতীয় পর্বে বেলা ১১.৪৫ ঘটিকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত উক্ত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। চুয়েটে জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রবিউল আলমের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহম্মদ, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী ও মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রনজিৎ কুমার সূত্রধর। মানবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব নাহিদা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বনিক, কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ হারুন, স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মো. জামাল উদ্দিন এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পুরকৌশল বিভাগের সাফকাত আর রুম্মান ও পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আজহারুল ইসলাম মাহমুদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করেন উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) জনাব মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, “১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের ১৮জন সদস্য শহিদ হয়েছিলেন। এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শের নাম, একটি দর্শনের নাম। বঙ্গবন্ধুর এই আদর্শ ও দর্শনকে আমাদের ধারণ করতে হবে। যেখানে শোষণ ও বৈষম্য চলে বঙ্গবন্ধু সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়তেন। স্বাধীনতার পরে একটা ভঙ্গুর দেশকে পরিচালনা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করলেন শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই প্রাথমিক শিক্ষাকে তিনি জাতীয়করণের ঘোষণা দিলেন। ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করলেন। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি তৈরির লক্ষ্যে তিনি বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। যা ছিল বঙ্গবন্ধুর একটা দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। পরবর্তীতে স্বার্থান্বেষী মহল দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে।” চুয়েট ভিসি আরও বলেন, “২০০৯ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের হাল ধরে অদ্যাবধি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন এখন বাস্তবতা। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পৌঁছে গেছে। কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী বসে নেই। তারা নানা ষড়যন্ত্রের মেতে আছে। তাই দেশের স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। তিনি ১৫ আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পূর্ণাঙ্গ রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।” শোক দিবসের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য শাহাদাত বরণকারী শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে রচনা প্রতিযোগিতা, শিশু-কিশোরদের জন্য রচনা প্রতিযোগিতা প্রভৃতি।