এ বছর তিন ধাপে ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৭ জনকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বিতরণে দুই বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। তিন দফায় চারটি ধাপে এ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। চলতি বছরে প্রথম দুই দফার তিন
ধাপে কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এ বছর তিন ধাপে সর্বমোট ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৭ জনকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। বাকি কার্যক্রম পরবর্তী বছরে সম্পন্ন করা হবে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী দেশের মোট ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। প্রথম দফার প্রথম ধাপে প্রায় ৫১ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩ ভাগ।
এরমধ্যে রয়েছে- সরকারি স্বাস্থ্য ও সমাজকর্মী ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬১ জন, বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ৭ লাখ, মুক্তিযোদ্ধা ২ লাখ ১০ হাজার জন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ফ্রন্টলাইনার ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৯ জন, সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনীর ৩ লাখ ৮ হাজার ৭১৭ জন, রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী ৫ হাজার জন, সম্মুখসারির সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী ৫০ হাজার জন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি (এমপি, মেয়র, কাউন্সিলর) ৬৮ হাজার ২৯৮ জন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার ঝুঁকিপূর্ণ কর্মচারী ১ লাখ ৫০ হাজার জন, ধর্মীয় নেতা ৫ লাখ ৮৬ হাজার জন, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার, ওয়াসা/ডেসা/তিতাস/ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ৩ লাখ ৫০ হাজার জন, স্থল/সমুদ্র/বিমানবন্দরে কর্তব্যরত ঝুঁকিপূর্ণ কর্মচারী ১ লাখ ৫০ হাজার জন, বিদেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক অদক্ষ কর্মী ১ লাখ ২০ হাজার জন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মচারী ৩ লাখ ৫০ হাজার, ব্যাংক কর্মচারী ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন, দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন রোগী ৫ লাখ ৭৫ হাজার জন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মী ২৬ হাজার ৭২১ জন, জরুরি কাজে ও মহামারি নিয়ন্ত্রণে কর্মরত ১ লাখ ১ হাজার ৯৪৯ জন। প্রথম দফার দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা হবে। যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭ শতাংশ। প্রথম দফার তৃতীয় ধাপে ১ কোটি ৭২ লাখ লোককে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯ শতাংশ। যাদের মধ্যে রয়েছে- পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়স্ক নাগরিক ৫৫ লাখ, একাধিক জটিল রোগে আক্রান্ত রোগী ২১ লাখ জন, শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩ জন, অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মী ৫০ হাজার, দুর্গম এলাকার বাসিন্দা ১ লাখ ১১ হাজার ২২৮ জন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ২০ লাখ জন, গণপরিবহনকর্মী ৬ লাখ, হোটেল-রেস্টুরেন্টকর্মী ৪ লাখ, গার্মেন্টকর্মী ৩৬ লাখ জন, যৌনকর্মী ও তৃতীয় লিঙ্গের ১ লাখ ৫০ হাজার জন্য। এই ধাপে আরো ৮১ হাজার জনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে মজুত রাখা হবে। দ্বিতীয় দফায় ও তৃতীয় ধাপে প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ নাগরিককে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। এই ধাপে থাকবেন- আগের ধাপে বাদ পড়া শিক্ষক ও কর্মচারী ৬ লাখ ৬৭ হাজার ২০৪ জন, গর্ভবতী নারী ৩৮ লাখ ১৫ হাজার ২০১ জন, প্রথম দফায় বাদ পড়া সরকারি কর্মচারী ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬২ জন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪৩ লাখ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মচারী ৬ লাখ জন, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ২২ লাখ জন, রপ্তানি কার্যক্রম ও অন্যান্য শিল্পে নিয়োজিত কর্মী ২০ লাখ ৮১ হাজার ৮৮৪ জন, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দরকর্মী ২৫ লাখ, কারাবন্দি ও কারাকর্মী ১ লাখ ৫৮৬ জন, কৃষি ও খাদ্যকর্মী ১৬ লাখ ৫০ হাজার জন, ডরমিটরিতে অবস্থানকারী ৫ লাখ, গৃহহীন ২ লাখ জন, অন্যান্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৫১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৪ জন, বাদ পড়া পরিবহনকর্মী ৩ লাখ, বাদ পড়া ৫০ থেকে ৫৪ বছর বয়সী ব্যক্তি ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৩২৩ জন। এই ধাপে মজুত থাকবে ৪ লাখ ৯৬ হাজার জনের জন্য।
দ্বিতীয় দফায় ও চতুর্থ ধাপে ৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা হবে। যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। এই ধাপে রয়েছে- অন্য ধাপে বাদ পড়া প্রাপ্তবয়স্ক যুব ৩ কোটি ২২ লাখ ৩৪ হাজার জন, শিশু ও স্কুলগামী ৩ কোটি ৬০ লাখ ৪৭ হাজার ১৫৭ জন এবং সকল পর্যায়ে বাদ পড়া ৮ লাখ ৪২ হাজার ৫৯৭ জন।