ঘর জীবাণুমুক্ত রাখতে

প্রতিটি মানুষের কাছেই নিজ বাড়ি বা ঘর নিরাপদ জায়গাগুলোর একটি। তবে আপনার একটি ভুলে নিরাপদ স্থানটি হয়ে উঠতে পারে ভয়ানক। বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনার অজান্তে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে করোনা নামক প্রাণঘাতী ভাইরাসের জীবাণু। আপনারই খোলা হাত, জুতা, পোশাক বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘরে আসতে পারে করোনাভাইরাসের জীবাণু।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, পরিষ্কার করা আর জীবাণুমুক্ত রাখা দুটো আলাদা বিষয়। ঘর-বাড়ি দেখতে পরিষ্কার মনে হলেও সেখানে থাকতে পারে জীবাণু। বিভিন্নস্থানে ভাইরাস বিভিন্ন সময় ধরে বেঁচে থাকতে পারে। যা আপনার ও আপনার পরিবারের স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পরিবারকে রক্ষার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ঘর সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করা। ঘর-বাড়ি নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা নির্ভর করে মানুষের পরিস্থিতি ও চারপাশে কী ঘটছে তার উপর।

অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারের কেউ যদি অসুস্থ নাও থাকে, তারপরও সতর্কতা হিসেবে প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা উচিৎ। এর জন্য বাজারে পরিষ্কার করার যেসব পণ্য পাওয়া যায় তাই যথেষ্ট। পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে এমন জায়গাগুলোতে মনোনিবেশ করতে হবে, যেগুলো সবার সংস্পর্শে বেশি আসে। দরজার হাতল, বৈদ্যুতিক সুইচ, টেবিল, ফোন, কিবোর্ড, টয়লেট, কিচেন সিঙ্ক ইত্যাদি গরম পানি ও জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। যেকোনো কিছু জীবাণুমুক্ত করার আগে, গ্লাভস পরা উচিত। আর পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত করার পর অবশ্যই হাত সাবান ও গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।’
এই মাইক্রোবায়োলজিস্ট আরও জানান, সবচেয়ে বেশি জীবাণুর দেখা পাওয়া যায় রান্নাঘরে বা যেখানেই খাবার তৈরি করা হয় সেখানে। কিংবা, যেসব পাত্রে খাবার পরিবহন করা হয় সেগুলো জীবাণুদের অভয়াশ্রম। তাই, বাজারের ব্যাগ বারবার ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সবশেষে অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরে না গেলেও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে আমাদের ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। আর এই সময় বাড়িতে অতিথিদের আসতে নিরুৎসাহিত করা ভালো।’