বাঁশখালীতে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১-এর বিচারক এ পরোয়ানা জারি করেন।

জেলা ও দায়রা জজ আদালত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ধর্ষকরা হলেন- কাজী মো. শহিদুল ইসলাম (২২), তৌহিদুল ইসলাম (৩০), আজম (২৫) ও জোবাইর (২৩)।

২০২৪ সালের ১১ জুলাই বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতের কাথরিয়া হালিয়াপাড়া পয়েন্টে ঝাউবাগানে বাহারছড়া রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির সেই শিক্ষার্থীকে কাজী শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী মামলা করার জন্য থানায় গেলে থানা মামলা নিতে গড়িমসি করে এবং ধর্ষকেরা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ওই স্কুলছাত্রী ছয়জনকে আসামি করে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১-এ মামলা করলে আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান কাজী মো. ইউসুফ ক্ষমতা বলে তার ছোট ভাই কাজী মো. শহিদুল ইসলামকে (২২) আদমশুমারির দায়িত্ব দেন। আদমশুমারির দায়িত্ব পেয়ে একই ওয়ার্ডের ইলশা গ্রামের জনৈক বিধবার একমাত্র মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ২০২৪ সালের ১১ জুলাই বিকেলে মেয়েটিকে কাথরিয়া ইউনিয়নের হালিয়াপাড়া অংশে বঙ্গোপসাগরের ঝাউবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে শহিদুলের বন্ধু তৌহিদের (৩০) একটি মাছের খামার ছিল। শহিদুল তার দুই বন্ধু মো. আজম (২৫) ও জোবাইরকেও (২৩) সেখানে ডাকে। সেখানে খোশগল্প করতে করতে পালাক্রমে ওই ছাত্রীকে বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্ষণ করে। এ খবর এলাকায় প্রচার হলে প্রভাবশালীরা কৌশলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়। পরে ধর্ষকরা ভুক্তভোগীকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট কিনে দেয় এবং ঘরে সাংবাদিক সাজিয়ে কিছু লোক দিয়ে হুমকি দেয়। থানায় গেলে মেয়েটির ক্ষতি হবে, ধর্ষকদের ক্ষতি হবে না বলে জানায় তারা। ঘটনাটি পুলিশ ও কাউকে না জানানোর জন্য বারবার হুমকি দেওয়া হয়।

জেলা ও দায়রা জজ আদালত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দীন বলেন, ‘পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চারজনের বিরুদ্ধে আদালত (বৃহস্পতিবার) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯(৩)/৩০ ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।’