রাঙ্গামাটিতে অবৈধভাবে পাহাড়ের ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে

রাঙ্গামাটি নানিয়ারচরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নানাক্রম এলাকায় পাহাড়ের ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। কয়েকদিন পরপর বালু উত্তলন করছে কয়েকটি চক্র। জনসম্মুখে নানাক্রম রাস্তার পাশেই বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। এছাড়া বগাছড়ি আমবাগান,বগাছড়ি রাস্তার মাথা, কুকুরমারা ব্রীজের ধারে, বগাছড়ি আমতলের ভিতরের সাইডের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

সচেতন মহল বলছেন, যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে এলাকাটি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়বে বলে সচেতন মহল মনে করছে। সেইসাথে আশেপাশের গ্রামের মানুষের বসতভিটা ও আবাদি জমি ভাঙনের সম্মুখীন হয়ে পড়বে। অনেকেই না দেখার ভান করে থাকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে নানাক্রম এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অবস্থা অনেকটা মগের মুল্লুকের মতো। নিজের ইচ্ছা মতো বালু উত্তোলন করছে। কিন্তু কারও যেন কিছু বলার নেই। এই বালু উত্তোলনের মাধ্যমে অবৈধভাবে টাকা কামাচ্ছে, আর অন্যদিকে পাহাড়ি এলাকাটি হুমকির মুখে পড়ছে। বালু তোলার মেশিন দিয়ে যত্রতত্রভাবে বালু উত্তোলন করলে পাড় ভেঙে গেছে। অর্থাৎ এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রকৃতিরও ক্ষতি হচ্ছে।

মধ‍্যমপুলি পাড়ার সুইউ মারমা জানান, স্বার্থসিদ্ধির জন্য এভাবে সর্বনাশ মেনে নেওয়া যায় না। এ ক্ষতি রোধ করতে হবে। তাদের দাবি, অবিলম্বে এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থেকে কেউ সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে কি না, সেটা তদন্ত করে বের করতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বালু ব্যবসায়ীর এই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত নানাক্রম, বগাছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু তুলছে।

নিচপুলি পাড়ার পাড়া প্রধান মংসিউপ্রু রোয়াজা বলেন, ‘কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। পাহাড়ি ছড়া থেকে গভীর করে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে তার খেসারত দিতে হয় পাশের ধারের জমির মালিকদের। ক্ষতি হয় ফসলি জমির। অনেক গাছপালা বিলীন হয়ে যায় নদীগর্ভে। তাছাড়া ছড়ায় পানি না থাকায়, গোসল, রান্নাবান্না পানি নেওয়া যাচ্ছে না, বালু তোলার ফলে পানি ঘোলা হয়ে যায়, বিভিন্ন অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে এলাকার লোকজনের।

বালু উত্তোলনকারী ছগির বলেন, মাত্র দুইদিন যাবত বালু উত্তোলন করা হয়েছে, তবে বেশি বালু তুলতে পারিনি, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছু বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছি।

এই বিষয়ে বগাছড়ি ওয়ার্ড সদস‍্য আব্দুল মালেক মুঠোফোনে জানান, আমার জানামতে,বগাছড়িতে আগে কিছু বালু উত্তোলন করা হয়েছিল, এখন বন্ধ আছে, আমরা বালু উত্তোলনের পক্ষে না, প্রশাসনের সাথে একযোগের কাজ করছি, যদি কেউ বালু উত্তোলন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হবে।