চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানিসংকট নিরসনের দাবিতে চট্টগ্রাম ওয়াসার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছেন কয়েকশ লোক।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এ ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এ সময় তাদের ওয়াসার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে পানির দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন সুরাহা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি পালন করে যাবেন। নগরের ডবলমুরিং থানাধীন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এ ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছেন।
নগরের ২৩ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, ‘আমরা অনেক দুর্ভোগের শিকার হয়ে ওয়াসা ভবন ঘেরাও করতে এসেছি। এ রমজানেও মসজিদে অজু করার পানি পাচ্ছি না। ঘরে রান্না কিংবা খাবারের পানিও নেই। যে কারণে বাধ্য হয়ে পানির সমস্যা সমাধানের দাবিতে ওয়াসা ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে এসেছি। পানি সমস্যার সমাধানে কোনও সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এ কর্মসূচি পালন করে যাবো।’
এ বিষয়ে জানার জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে, চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নুরুল আমিন বলেন, ‘শনিবার রাতে সাগরিকা এলাকায় পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের ভূগর্ভস্থ কেবল বসানোর সময় আমাদের ৪৪ ইঞ্চি ব্যাসের সরবরাহ লাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে হালিশহরে যে ট্যাংকে পানি রেখে আমরা পানি সরবরাহ করি, সেখানে পানি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য হালিশহর, আগ্রাবাদ, সিডিএ, দেওয়ানহাট ও আশেপাশের এলাকায় পানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। মেরামত কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা পানি সরবরাহ সচল করতে পারবো।’
এ বিষয়ে ওয়াসা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এই সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে হালিশহর এলিভেটেড ট্যাংক হয়ে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, সিডিএ আবাসিক এলাকা, পশ্চিম মাদারবাড়ি, হালিশহর, বড়পোল, ছোটপোল, বেপারীপাড়া, গোসাইলডাঙ্গা, পানওয়ালাপাড়া, পোস্তার পাড়, ধনিওয়ালা পাড়া, কদমতলী, হাজীপাড়া, শান্তিবাগ, মুহুরীপাড়া, পাহাড়তলী, ঈদগাঁ, দেওয়ানহাটসহ সংলগ্ন এলাকায় পানি সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।
এর আগে, ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কের অনন্যা আবাসিক-সংলগ্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলাকালে ওয়াসার ৪৮ ইঞ্চি ব্যাসের সরবরাহ পাইপলাইন ফেটে যায়। তখন নগরীর হালিশহর, আগ্রাবাদ, মাদারবাড়ী, দেওয়ানহাট, লালখান বাজার, ওয়াসার মোড়, জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেট, বায়েজিদ বোস্তামি, নাসিরাবাদ, মুরাদপুর, কদমতলী, বহদ্দারহাট, কুয়াইশ, জামালখান, চকবাজার, আন্দরকিল্লা ও সংলগ্ন এলাকাসহ শহরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন প্রায় পাঁচ দিন পর পানি সরবরাহ শুরু হয়। সব এলাকায় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হতে প্রায় এক সপ্তাহ লেগে গিয়েছিল।