রাঙ্গামাটির সমতা ঘাটের দিন দিন জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে

রাঙ্গামাটির ফলের হাট সমতা ঘাট। ভাসমান ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে দিন দিন জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ হাটে পাহাড়ে উৎপাদিত সব ধরনের ফল বিক্রি হয়, যার মধ্যে কেমিকেলমুক্ত ও তরতাজা ফলের চাহিদা অনেক বেশি। সমিতির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিহাটে সমতা ঘাটে প্রায় ৪ কোটি টাকার ফল বিক্রি হয়।

ব্যবসায়ীরা সারা দেশ থেকে ভিড় করেন এই হাটে। তবে রমজানের প্রভাব পড়েছে হাটে, এতে ফলের দাম বেড়েছে প্রকারভেদে ৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এতে বাগানিরা খুশি হলেও নাখোশ ব্যবসায়ীরা।

পাহাড়ি গ্রাম থেকে কাক ডাকা ভোরে, কুয়াশা ভেদ করে একের পর এক যন্ত্রচালিত নৌকা এসে ভেড়ে সমতা ঘাটে। এসব নৌকা বোঝাই করে আনা হয় আনারস, বেল, কলা, তরমুজ— যার চাহিদা রমজানে আকাশচুম্বি। তাই ব্যবসায়ীরা বোট থেকে বোট ছুটে যান পছন্দের ফল কিনতে। ফলের আকার ও রঙের ওপর নির্ভর করে হাঁকা হয় দাম। ক্রেতা-বিক্রেতার দর কষাকষিতে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।

বাজার পরিদর্শনে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতি পিস আনারস ৫-২৫, বেল ১৫-৩০, তরমুজ ১৫০-২৫০ এবং কলার ছড়া ২০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, রমজান শুরু হওয়ায় ফলের দাম ৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। তবে বাগানীরা বলছেন, বর্তমান দরের থেকে কম বিক্রি করলে তাদের লাভ হয় না।

কৃষক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমি ভাসান্যাদম থেকে এক বোটে ৬০০ বড় আকারে তরমুজ নিয়ে এসেছি। প্রতিটি দাম চেয়েছি আড়াইশ টাকা, কিন্তু ব্যবসায়ীরা ১৮০ টাকা দিচ্ছিল। তবে বাজার ভালো থাকায় ২৩২ টাকা দরে বিক্রি করেছি।’

সমীর চাকমা বলেন, ‘গত হাটে আনারস ১২-১৫ টাকা পিসে বিক্রি করেছিলাম, তাতে লস হয়েছে। এবার ২৫ টাকা দরে বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা আমাদের উপযুক্ত দাম দিতে চায় না।’

ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন বলেন, ‘ফলের বাজারে দাম বাড়ছে। গত হাটে যে আনারস ১০ টাকায় কিনেছিলাম, এখানে কিনতে হচ্ছে ২৫ টাকা দরে। এখন গাড়ি ভাড়া দিয়ে ঢাকা নিয়ে বিক্রি করব কত দামে?’

উত্তর বনরুপা (সমতাঘাট) ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিজয় গিরি চাকমা বলেন, ‘পাহাড়ে উৎপাদিত ফলে কেমিকেল মুক্ত এবং স্বস্তিদায়ক বেচাকেনার কারণে এই হাট দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। এখানে বুধ ও শনিবার দুই দিন হাট বসে। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, সারা বছরই এখানে কোনো না কোনো ফল পাওয়া যায়।’