দ্বিরাষ্ট্র সমাধানই ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনের একমাত্র পথ: পোপ লিও

দ্বিরাষ্ট্র সমাধানই ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনের একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেছেন খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় নেতা পোপ চতুর্দশ লিও। পোপ হিসেবে নিজের প্রথম বিদেশ সফরকালে রোববার (৩০ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি। খবর রয়টার্সের।

চলতি বছরের মে মাসে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর ক্যাথলিক চার্চের প্রধান নির্বাচিত হন পোপ লিও। এরপর এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর। গত বৃহস্পতিবার সফর শুরু করেন তিনি। সফরকালে গত তিন দিন তুরস্কে কাটান তিনি।

এরপর রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে লেবাননে পৌঁছান। ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের অব্যাহত হামলার মধ্যে তার এই সফরকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

তুরস্ক থেকে লেবানন যাওয়ার পথে বিমানের মধ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন পোপ। ফিলিস্তিন ইস্যুতে ভ্যাটিকানের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলমান সংঘাতের একমাত্র সমাধান হলো একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, এই মুহূর্তে ইসরাইল সেই সমাধান মেনে নিচ্ছে না। কিন্তু আমরা এটাকেই একমাত্র সমাধান হিসেবে দেখছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইসরাইলেরও বন্ধু এবং দুই পক্ষের মাঝে মধ্যস্থতার ভূমিকা রাখতে চাই, যাতে সবার জন্য ন্যায়সংগত সমাধানের দিকে এগোনো যায়।’

ইসরাইলের বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতাই বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার তীব্র বিরোধিতা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পোপ জানান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে ইসরাইল-ফিলিস্তিন ও ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। উভয় যুদ্ধের অবসানে তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

তুরস্ক সফরকালে পোপ লিও সতর্ক করে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকা রক্তক্ষয়ী সংঘাত মানবজাতির ভবিষ্যৎকে ঝুঁকিতে ফেলছে। ধর্মের নামে এসব সহিংসতার নিন্দা জানান তিনি।

তুরস্ক মূলত মুসলিমপ্রধান দেশ হলেও এখানেই বসবাস করেন বিশ্বের ২৬ কোটি অর্থোডক্স খ্রিস্টানের আধ্যাত্মিক নেতা ইক্যুমেনিকাল প্যাট্রিয়ার্ক বারথলোমিউ।

ধর্মীয় সহাবস্থানের উদাহরণ হিসেবে তুরস্কের প্রশংসা করে পোপ বলেন, ‘ভিন্ন ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে। বিশ্বের সর্বত্রই আমরা এ ধরনের উদাহরণ দেখতে চাই।’