পরিবেশ ও নারীবান্ধব সমাজ গঠনে সবাইকে কাজ করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এখনই সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতে হবে। একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক, পরিবেশবান্ধব, ও নারীবন্ধব সমাজ গঠনে সবার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি সতর্ক করে বলেন, আমরা যে বাংলাদেশকে চিনি, আমাদের সন্তানেরা হয়তো সেই মানচিত্র আর দেখবে না, যদি আমরা এখনই সচেতন না হই।

শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারের এক্সপো ভিলেজে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ আয়োজিত সমাবর্তন ২০২৫-এ সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বায়ুদূষণ, বন ধ্বংস ও নদীদূষণের মতো সমস্যা রাতারাতি বন্ধ করা সম্ভব নয়, তবে ধাপে ধাপে সমাধান করা গেলে পরিবর্তন সম্ভব। এরইমধ্যে নদী পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং পরিবেশ রক্ষায় আইন-নীতির সংশোধন প্রক্রিয়া চলমান। যথাযথ সহযোগিতা পেলে এসব উদ্যোগ আরও গতিশীল হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রাণীকল্যাণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ধর্মও আমাদের প্রাণীর প্রতি দয়া করতে শেখায়। অথচ আমরা অনেক সময় মানুষ তো বটেই, প্রাণীদের প্রতিও নিষ্ঠুর হই। মানবিক সমাজ গড়তে হলে প্রাণী ও প্রকৃতির প্রতি সদয় হতে হবে।

ভালো প্রজন্ম গঠনে পরিবার, সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে হলে নিজেদের মধ্যেই ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, অতীতের অন্যায়-অবিচার ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও মানুষের স্বপ্নই বহুবার সমাজকে এগিয়ে নিয়েছে।

সমাজে নেতিবাচক প্রচারণা বাড়ায় সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই বৈষম্যহীন সমাজ। তাই রাজনীতি হবে মানুষের অধিকার ও ক্ষমতায়নের রাজনীতি। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সমস্যা গভীর এক-দুই বছরে সব সমাধান সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেককে তার নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, দায়িত্ব নিতে হবে, সমাজের জন্য ভাবতে ও কাজ করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, স্বপ্ন দেখতে হবে এবং মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ফারাহনাজ ফিরোজ, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউনুছ মিয়া এবং রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আব্দুল মতিন।

সমাবর্তন ২০২৫–এ ৫টি অনুষদ ও ১৪টি বিভাগ থেকে মোট ১,৪০৭ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সর্বোচ্চ সিজিপি অর্জনের জন্য পাঁচ অনুষদ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক এবং আরও ৪০ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।