শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব রক্ষার লড়াই সংগ্রামকে বেগবান করুন: সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে বিকাল ৪টায় নগরের নিউমার্কেট মোড়ে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার স্কুল বিষয়ক সম্পাদক উম্মে হাবিবা শ্রাবণীর পরিচালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা সদস্য আহমদ জসিম, ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক নির্ঝরা, পটিয়া শাখার সদস্য শারমিতা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিজন সিকদার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৮৪ সালের ২১ জানুয়ারি সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের উত্তাল সময়ে সর্বজনীন-বিজ্ঞানভিত্তিক-সেক্যুলার-বৈষম্যহীন-একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রত্যয় নিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট তার লড়াই সংগ্রামের ৪দশক পার করছে। জুলাইয়ের রক্তস্নাত অভ্যুত্থানের পরে মানুষ আশা করেছিলো শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্যের অবসান হবে। মানুষ একটি সর্বজনীন-বিজ্ঞানভিত্তিক, সেকুলার-বৈষম্যহীন একই ধারার গণতান্ত্রিক শিক্ষা পাবে। শিক্ষাঙ্গন হবে অবাধ জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার এবং প্রগতিশীল ধ্যান-ধারণার বিকাশের ক্ষেত্র। যে আকাঙ্ক্ষা প্রতিধ্বনিত হয়েছিল ‘৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনে কিংবা ‘৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকালে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের দশ দফায় । কিন্তু এখনও গণ অভ্যুত্থানে গঠিত সরকারকে সে অনুযায়ী কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তিদের পদায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষা কারিকুলাম সংস্কার কমিটি থেকে মৌলবাদী শক্তির হুমকির পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী নামটি বাদ দিয়েছে যা অনভিপ্রেত। পরে প্রতিবাদ করতে গেলে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হাতে নির্মমভাবে হামলার স্বীকার হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর জানুয়ারি পার হতে চলেছে কিন্তু এ সরকার এখনো সম্পূর্ণ বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারেনি। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-শ্রমিক- জনতা গনহত্যার স্বীকার হয়েছে এবং হাজার হাজার ছাত্র জনতা আহত হয়েছে, নিহতদের পরিবার কে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সু চিকিৎসা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি! বক্তারা অবিলম্বে জুলাই অভুত্থানে নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত, শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে মব ট্রায়াল বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিউমার্কেট মোড় প্রদক্ষিণ করে সমাবেশ স্থলে এসে শেষ হয়।