স্থবিরতা কাটিয়ে গতি ফিরছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে
ডলারের সরবরাহ বাড়তে থাকায় জুলাই-আগস্টের স্থবিরতা কাটিয়ে গতি ফিরছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাল্ক পণ্য আমদানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে কনটেইনার হ্যান্ডলিং। এছাড়া, রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ বাড়ায় জটিলতা কাটতে শুরু করেছে এলসি খোলায়।
চট্টগ্রাম বন্দরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেই ৮ লাখ ২৬ হাজার ৫২৮ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ হাজার ৬৯৭ টিইইউএস বেশি। রাজনৈতিক অস্থিরতায় জুলাই ও আগস্টে স্থবিরতা থাকলেও সেপ্টেম্বর মাসে ২ লাখ ৮৩ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে।
এদিকে, ডলার সংকটের কারণে জুলাই ও আগস্টে এলসি খোলার জটিলতায় বাল্ক পণ্য যেমন আমদানি কম হয়েছে, তেমনি পণ্যবাহী জাহাজও এসেছে তুলনামূলক কম। তবে সেপ্টেম্বর মাসে উভয়ই বেড়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, গত জুলাই ও আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বন্যাজনিত কারণে বন্দরে পণ্য আমদানি ও খালাস কম হয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে এসে বন্দরের কার্যক্রমে গতি এসেছে; আগামীতে আরও বাড়বে।
মোট ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্যের পাশাপাশি রফতানি পণ্যের শতভাগ শুল্কায়ন এবং জাহাজীকরণ সম্পন্ন হয় বেসরকারি ২১টি অফডকে। জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে অফডকগুলোতে ৫.৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হিসেবে ২ লাখ ১ হাজার ৮৭০ টিইইউএস রফতানি এবং ৫.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হিসেবে ৬৯ হাজার ১৪৭ টিইইউএস আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, সেপ্টেম্বরে আমদানি ও রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বছরের শেষ মাসগুলোতেও এ ধারা অব্যাহত থাকলে লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরা।
ডলারসংকটের কারণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলায় ব্যাপক বিধি-নিষেধ আরোপ করে। বর্তমানে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এবং রিজার্ভের অবস্থান সুসংহত হওয়ায় এলসি খোলার জটিলতাও কেটে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ডলারসংকট কাটিয়ে উঠতে হবে; পাশাপাশি স্বাভাবিক করতে হবে এলসি প্রক্রিয়াও।
উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টিইইউএস কনটেইনার, ১২ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন কার্গোপণ্য হ্যান্ডলিং করে। আর বন্দরে গেলো অর্থবছরে পণ্যবাহী জাহাজ এসেছিল ৩ হাজার ৯৭১টি।
