কাপ্তাইয়ে অভুক্ত পাগলের জন্য ভালবাসা

 

নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই মানবিকতাবোধ’ আমাদের সমাজ থেকে এখনো শেষ হয়ে যায়নি। কিছু বিষয়ে মানুষ এখনো অনেক উদার।বিশেষ করে মানসিক ভারসাম্যহীন(পাগল) রাস্তায় থাকা মানুষগুলির খবর কেই বা রাখে।এমন পাগলদের খুঁজে পরম যত্নে খাওয়ানো কম কথা নয়। কাপ্তাইয়ের ১০ যুবক প্রায় একমাস যাবৎ সেই কাজটি করে যাচ্ছে। কারণ, স্বভাবিক সময়ে কোন রকমে খেয়ে জীবন ধারন করলেও “লক ডাউনের” সময় ফুটপাতের এসব মানসিক ভারসাম্যহীন থেকে শুরু করে রাস্তার কুকুর পর্যন্ত অভুক্ত রয়েছে। করোনার প্রকোপে তারাও অনাহারে জীবন কাটাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাপ্তাই সড়কের চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে শুরু করে কেপিএম হয়ে কাপ্তাই পর্যন্ত মানসিক ভারম্যহীন মানুষের সংখ্যা আনুমানিক ৩২ জন। ঘরে খাবার প্রস্তুত করে প্রতিদিন ত্রিশ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে জনে জনে বিতরণ করা সহজ কাজ নয়। এই অসাধ্য কাজটি প্রতিদিন মনের আনন্দে করে যাচ্ছে চন্দ্রঘোনা, কাপ্তাই এবং রাংগুনিয়ার মোঃ হায়দার, ইকবাল,হারুন, ইমরান, শহীদুল ও সেকান্দার, মাসুদ পারভেজ সহ তারা ১০ জন। আবার এসব খাবার নিজ হাতে রান্নাবান্নার কাজ করেন ইকবালের স্ত্রী। কখনোও চিকেন বিরিয়ানি, খিচুরি, ডিম, সাদাভাত দেওয়া হচ্ছে এদের। তাদের মানবতা এখানেই শেষ নয়। তাদের উদ্যোগে প্রায় ৮ জন মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মাঝেও খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। আবার খাবার অতিরিক্ত হয়ে গেলে রাস্তার অভুক্ত কুকুরদের মাঝেও বিতরণ করেন তারা। তাদের ইচ্ছা তারা এই খাবার বিতরণ চালু রাখবে যতদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়। কেউ বাইক দিয়ে, কেউ শ্রম দিয়ে, আবার অনেকে নাম প্রকাশ না করে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করে আসছে। প্রতিদিনের খাবারে আনুমানিক খরচ হয় ১ হাজার টাকা। মহৎ কাজটি বিগত প্রায় একমাস ধরে চলমান থাকায় স্বাভাবিক কারণে ফান্ড সংকটে। তারা জানান, কোন সহৃদয়ান ব্যাক্তি যদি তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চান তাদের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান। পাগলের জন্য তাদের এই ভালোবাসার পাগলামি সত্যিই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।