অযথাই সরকারি অর্থের অপচয়, সেতু আছে সড়ক নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক :ফটিকছড়ি উপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামের ফটিকছড়ি খালের উপর নির্মিত স্থানীয়দের স্বপ্নের সেতু। কিন্তু সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকায় মানুষের কোনো উপকারেই আসছে না। ২৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা প্রাক্কলিত অর্থের টাকায় নির্মণ করা হলেও সেতুটি নষ্ট হচ্ছে অযত্ন অবহেলায়। বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে সংযোগ সড়ক বিহীন সেতুটি। শুধু সংযোগ সড়কের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ শিক্ষার্থীরা। অথচ সরকারি টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেতু এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলছেন, অযথাই সরকারি অর্থের এমন অপচয় করা হয়েছে। মানুষেরই যদি কাজে না লাগে তাহলে এসব সেতু নির্মাণ করা হলো কেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেরার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ওজানপাড়া ত্রিপুরা পাড়ার অংশে ফটিকছড়ি খালের উপর ৩৬ ফুট দৈ  সেতুটি খালের এক অংশে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। বিশাল এ খালের ওপর ছোট্ট এ সেতুটি যেন এক পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। যার কারণে সেতুটি নির্মাণের পর বছর না যেতেই পানির তীব্র স্রোতে সেতুর এক পাশ ভেঙে সড়ক তলিয়ে যায়। খালের এক অংশে সেতুর বাকিটা ফাঁকা।বর্তমানে সেতুর একপাশে কোনো সড়ক নেই। সড়ক থেকে সেতুর দূরত্ব প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ফুট। সাধারণ মানুষ খালের পানি পাড় হয়েই পায়ে হেঁটে যাতায়াত করছে। মানিক ত্রিপুরা বলেন, বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি পানির ঢলে স্রোতে ওই সেতু হতে সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অপরিকল্পিতভাবে সেতুটি নির্মাণ করায় সেতুটি মানুষের ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেতুটি এখন এলাকাবাসীর কাছে মরার ওপর খরার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।  স্থানীয়রা আরো জানান, এত বড় সেতুটি নির্মাণের পরও আমরা সেতুর নিচ দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। বর্ষাকালে যোগাযোগ সম্পন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একটু বৃষ্টি হলেই কাপড় ভিজে আসা-যাওয়া করতে হয়। সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। জন্ম-মৃত্যু, বিবাহ- সাধিতে, রাতের অন্ধকারে বর্ষাকালে চরম দুর্ভোগ দুর্দশা পোহাতে হয়। উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৫/১৬ অর্থবছরে বড়বিল নয়াহাট-সড়কে ফটিকছড়ি খালের ওপর (আরসিসি বক্স কালভার্ট) সেতুটি প্রায় ২৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা প্রাক্কলিত অর্থের পরিমাণে নির্মাণ করা হয়। হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, ব্যক্তিগত অর্থ থেকে সংযোগ সড়কটি পুনরায় নির্মাণ করে দিয়েছি। পাহাড়ি ঢলে পানির স্রোতে ভেঙ্গে নিয়ে যায়। দুই বার পুনঃনির্মাণ হয়েছে। বরাদ্দ ফেলে স্থায়ীভাবে সংযোগ সড়কটি আবার নির্মাণ করব। ফটিকছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, সংযোগ সড়কে ২-৩ বার করা হয়েছে। বর্ষার পানিতে বারবার ভেঙ্গে যায়। সেতুটি সংযোগ সড়কের বিষয়ে আমার সিনিয়র অফিসারদের সাথে কথা হয়েছে । আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগসহ সড়কটি পুনরায় নির্মাণ করা হবে।