বিয়েতে দাওয়াত না দেওয়ায় ইউপি সদস্যের বোমা হামলা

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় দাওয়াত না পেয়ে বিয়ে বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসির বেপারী ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। এতে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী বেপারীকান্দি গ্রামের বুধাইরহাট বাজার সংলগ্ন সৈয়দ তাজুল ইসলামের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ২১ জনকে আসামিকরে জাজিরা থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এরই মধ্যে আব্দুর রহমান খাঁ (২২) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

টকচচম

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চেরাগ আলী বেপারীকান্দি গ্রামের সৈয়দ তাজুল ইসলাম তাঁর চাচাতো বোনের বিয়ে উপলক্ষে একটি ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসির বেপারীসহ তাঁর লোকজনদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হন নাসির বেপারী ও তাঁর লোকজন। বিয়ে বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলাকালে নাসির বেপারী ও তাঁর লোকজন ককটেল বিস্ফোরণ করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

কচমসটচ

এ সময় বিয়েবাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর ও বসতঘরেও বোমা হামলা করা হয়। বিয়েবাড়ির খাবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে নষ্ট করা হয় এবং বিয়েতে আসা পিন্টু সরদারের দুইটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এ ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিরীহ মানুষ। আমার চাচা অসচ্ছল ও অসুস্থ হওয়ায় আমি দায়দায়িত্ব নিয়ে চাচাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করি। সেখানে মেম্বার নাসির বেপারী ও তাঁর লোকজনকে দাওয়াত না দেওয়ায় তাঁরা আমার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বোমাবাজি করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’

ম্জ

বিয়ে বাড়িতে বেড়াতে আসা অনিক সরদার বলেন, ‘আমরা গায়ে হলুদের সময় নিজেরা আনন্দ করছিলাম। এ সময় হঠাৎ বেশ কয়েকজন লোক বাড়ির সামনে এসে ককটেল ফাটায়। পরে বাড়িতে ঢুকে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য সাজানো সব আসবাবপত্র ভাঙচুর শুরু করে। কোনোকিছু বুঝতে না পেরে তাঁদের কাছে এর কারণ জানতে গেলে তাঁরা আমাকে ইটপাটকেল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। প্রায় আধাঘণ্টা তাণ্ডব চালানোর পর তাঁরা চলে যায়।’

বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী আরেক স্বজন জেরিন আক্তার বলেন, ‘হামলার সময় একের পর এক বোমার শব্দে আমার শিশু সন্তান আঁতকে ওঠে। এরপর থেকে জ্বরে ভুগছে।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নাসির বেপারী বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। তবে জেনেছি তাজুল ইসলাম তাঁর চাচাতো বোনের বিয়েতে এলাকার কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে দাওয়াত করেনি। এ নিয়ে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টাও করেছি। কিন্তু তাজুল ইসলাম উল্টো তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন।’

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিয়ে বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’