দেশজুড়ে প্রাণের উৎসব বর্ষবরণ


অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রাণের উৎসব বর্ষবরণ। বাংলা নববর্ষ বরণে বিভিন্ন জেলাতেও ছিলো বর্ণাঢ্য আয়োজন। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ-

চট্টগ্রাম

নতুন বছরকে বরণ উপলক্ষে এবছরও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটিস্থানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নানা আয়োজন।

নগরের ডিসি হিলে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ উদ্যোগে নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান শুরু হয় ভোর সাড়ে ৬টায়। দুপুরে নামাজের বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন। এছাড়া, সকাল ৭টায় সিআরবি’র শিরীষ তলায় চট্টগ্রাম নববর্ষ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে শুরু হয় বর্ষ বরণের অনুষ্ঠান।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বছরকে বরণ উপলক্ষে নানা আয়োজন করেছে কর্তৃপক্ষ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও গ্রামবাংলার বিভিন্ন খেলাধুলার। তাছাড়া নগরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন রয়েছে।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে নানা আয়োজনে চলছে নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান।
প্রতিটি ভেন্যুতে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।
মুন্সিগঞ্জ

বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উদযাপনে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মুন্সিগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা।

রোববার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গন এসে শেষ হয়।

জেলা প্রশাসক মো, আবু জাফর রিপনের নেতৃত্বে এতে মুক্তিযোদ্ধা, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

নোয়াখালী

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নোয়াখালীতে বর্ষবরণ উদযাপিত হচ্ছে।

সকালে জাতীয় সংগীত ও বৈশাখী গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে বর্ণাঢ্য র‌্যালি, পান্তা উৎসব, সাংকৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার উদ্ধোধন হয়।

জেলা হাসপাতাল, কারাগার, সরকারী শিশু পরিবারে বাঙ্গালী খাবার পরিবেশন করা হয়।

লক্ষ্মীপুর

বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণ উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা, বর্ষবরণ এবং ৩ দিনব্যাপি বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

সকালে সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা কালেক্টর ভবণ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।

পরে কালেক্টর ভবন প্রাঙ্গণে বর্ষবরণ ও ৩ দিনব্যাপি বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করা হয়। জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু।

পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি শিল্পীদের অংশগ্রহণে বর্ষবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে।

নড়াইল

‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’ এই শ্লোগানকে সামনে নিয়ে নড়াইলে বিভিন্ন আয়োজনে মধ্যে দিয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণ করল নড়াইলবাসী।

জেলা প্রশাসন ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চ চত্বরে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দিন ব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

রোববার সকালে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পরিবেশনায় প্রভাতি সংগীত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন বর্ষকে বরণ শুরু হয়। পরে সকাল ৮টায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী।

পরে ঐ স্থান থেকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের অংশগ্রহনে ঢাক, ঢোল, কাসর বাজিয়ে বিভিন্ন প্লেকার্ডে সজ্জিত একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা ও হাড়িভাঙ্গা প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়াও দিনের অন্যান্য কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।

যশোর

যশোরে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় নববর্ষ বরণ করা হয়েছে। সকাল ৯টার দিকে শহরের টাউন হল ময়দানে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার। এতে যশোরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়। শোভাযাত্রা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাউন হল ময়দানে এসে শেষ হয়।

এর আগে সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে যশোর পৌর পার্কে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। সংগঠনের শিল্পীরা গান, নাচ, আবৃত্তি পরিনেশনের মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করেছে। একই সময়ে মুসলিম একাডেমি মাঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করেছে পুনশ্চ যশোর। সংগঠনের শিল্পীরা তাদের নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। এছাড়াও সুরবিতান, চারুপীঠসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচিতে নববর্ষ উদযাপন হচ্ছে।

সকালে সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অতিথিদের জন্য পান্তা-রুই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

বাগেরহাট

নেচে-গেয়ে বাংলা বর্ষকে বরণ করল বাগেরহাটবাসী। সকাল সাড়ে ৯টায় বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বৈশাখী গানের মাধ্যমে বর্ষ বরণের অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহিদ মিনারের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।

শোভাযাত্রা শেষে অডিটোরিয়াম চত্বরে সাত দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করেন। এসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার প্রতিনিধি ও নানা বয়সী সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই মেলায় নাগরদোলা, নৌকা দোলাসহ ১০টি স্টল অংশ নিয়েছে। ২০ এপ্রিল সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ভেষজ উদ্যান থেকে শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে মঙ্গল শোভাযাত্রা দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।

একইভাবে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ, শ্যামনগর, দেবহাটা, তালাসহ সব উপজেলার গ্রামে পাড়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা।

পহেলা বৈশাখ, বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিনকে ঘিরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা, লোকজ মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা চত্বর হতে বর্ণাঢ্য পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। শহর ঘুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে লোকজ মেলার উদ্বোধন হয়।