চুল পড়তে শুরু করেছে

চুল পড়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট কারণ এখনো অজানা। তবে কিছু কারণ আজকাল চুল পড়ার সমস্যা সমাধানে সহায়ক ও ফলপ্রসূ। কারণগুলো হলো- * অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোনের প্রভাব। এতে নারীদের চুল পড়ে ও পুরুষের টাক হয় বলে মনে করা হয়। যাদের শরীরে এই হরমোনের প্রভাব বেশি, তাদেরই বেশি করে চুল পড়ে। নারীর মেনোপজের সময় ও পরে এ হরমোনের হার বেড়ে যায়। * প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আমিষ, শর্করা, চর্বি, খনিজ ও ভিটামিন পরিমিত পরিমাণে না থাকা। * দুশ্চিন্তা বা মানসিক সমস্যায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চুল পড়তে পারে। * কেমোথেরাপি দেয়ার দুই-তিন সপ্তাহ পর চুল পড়া শুরু করে। * টাইট করে খোঁপা বা ব্যান্ড করলেও চুল পড়ে যেতে পারে।

* চুল রঙিন করার প্রসাধন বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে, চুল সোজা করা বা ক্রমাগত রিবন্ডিং করলে চুল পড়ার হার বেড়ে যেতে পারে। * অ্যানিমিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কিছু অসুখে চুল পড়ে যেতে পারে। * শরীরে বড় কোনো অপারেশনের পর বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন অথবা মানসিক উদ্বেগের কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। * বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল পড়তে পারে। চুল পড়ে যাচ্ছে বুঝবেন যেভাবে একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ১০০ বা তার কিছু বেশি চুল পড়া স্বাভাবিক। এর বেশি পড়লে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রাথমিকভাবে বালিশ, তোয়ালে বা চিরুনিতে লেগে থাকা চুল গুণেও কিছুটা অনুমান করা যায় চুল অতিরিক্ত পড়ছে কিনা। আরও নিশ্চিত হতে অল্প এক গোছা চুল হাতে নিয়ে হালকা টান দিন। যদি গোছার চার ভাগের এক ভাগ চুল উঠে আসে, তবে মনে করবেন চুল অতিরিক্ত পড়ে যাচ্ছে। নিজেই করুন প্রাথমিক প্রতিরোধ * চুল খুশকিমুক্ত ও পরিষ্কার রাখুন। * মানসিক চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুমান। * চুলে কলপ, কৃত্রিম রং এসব এড়িয়ে চলুন। * জোর করে বা চুলে চাপ দিয়ে কোঁকড়া চুল সোজা করবেন না, চুলে কোনো রাসায়নিক ব্যবহার না করাই ভালো। * চুল শুকিয়ে আস্তে আস্তে আঁচড়াবেন এবং ভেজা চুল বেশি আঁচড়াবেন না। * চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। * প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান। চিকিৎসা চুল পড়া রোগীদের টেনশন দূর করতে এবং নতুন চুল গজাতে বেশ কিছু কার্যকরী চিকিৎসা আছে। প্রথমে চুল পড়া ব্যক্তির চুলের অবস্থা দেখে এবং ট্রাইকোস্ক্‌যান করে চুলের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা হয়। গুরুতর সমস্যা না থাকলে প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ ও পথ্য দেয়া হয়। সমস্যা গুরুতর হলে কিছু চিকিৎসা, থেরাপি ও চুল প্রতিস্থাপন পদ্ধতির দ্বারস্থ হতে হয়। স্থায়ী পদ্ধতি টাক মাথার ব্যক্তিদের পেছনে যথেষ্ট চুল থাকলে সেখান থেকে চুল তুলে এনে প্রতিস্থাপন করা হয়। যাকে বলা হয় স্থায়ী পদ্ধতি। শরীরের অন্য জায়গা থেকেও চুল তুলে এনে প্রতিস্থাপন করা যায়। এ ধরনের চিকিৎসা এখন দেশে ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে করা সম্ভব। এ ছাড়া চুলের সমস্যা হলে ও নতুন চুল গজাতে বর্তমানে পিআরপি থেরাপি খুব জনপ্রিয় পদ্ধতি। এগুলো ছাড়াও কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে চুল পড়া রোধের চিকিৎসায়।

লেখক: হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ও চিফ কনসালট্যান্ট কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার। যোগাযোগ: কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার, বিটিআই সেন্ট্রা গ্র্যান্ড, ফার্মগেট, গ্রীন রোড, ঢাকা। সেল-০১৭১১৪৪০৫৫৮