পাবনায় শ্রমিক সংকট ধান কেটে দিল ছাত্রলীগ

একদিকে ধানের মূল্য কম অন্যদিক শ্রমিক সংকটে সারাদেশের মতো পাবনার কৃষকরাও জমির পাকা ধান কাটতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক কষ্টে শ্রমিক মিললেও দিতে হচ্ছে চড়া মজুরি। এমন দুঃসময় কৃষকের শ্রমিক সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে পাবনা জেলা ছাত্রলীগ।

শুক্রবার ও বৃহস্পতিবার পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে তিনজন কৃষকের তিন বিঘা জমির ধান কটে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শিবলী সাদিকের নেতৃত্বে ষাট সদস্যের একটি দল কৃষকদের প্রতি ভালোবাসা আর সহযোগিতার জন্য তারা বিনামূল্যে এই ধান কাটার কাজ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, সকাল ৯টার দিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে শহরতলীর মালিগাছা ইউনিয়নের গাছপাড়া এলাকার বাহাদুরপুর গ্রামে যান। তারা ঐ গ্রামের মাঠে পাকা ধান নিয়ে বিপদগ্রস্ত কৃষক শুকচাঁদ মিয়া, আব্দুল খালেক ও হাসান মিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। এরপরে তাদের অনুমতি নিয়ে ধান কাটতে শুরু করেন তরুণ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। বিকাল ৩টা পর্যন্ত তারা তিন কৃষকের তিন বিঘা জমির ধান কেটে তার উঠনে পৌঁছে দেন।

এ সময় জেলা ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের সভাপতি শিবলী সাদিকের নেতৃত্বে সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম, যুগ্ম সম্পাদক ফিরাজ আলী, সদস্য নাজিউর রহমান, সদর উপজলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান শেখ ও পাবনা পলিটকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগর সভাপতি ছানাউল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত শ্রমিক সংকটের কারণেই তারা ধান কাটতে পারছিল না। অনেক কষ্টে শ্রমিক পাওয়া গেলেও মজুরি অনেক বেশি। ৫০০ টাকা দিন হাজিরার প্রতিজন শ্রমিক নিতে হচ্ছে ৬৫০ থেক ৭০০ টাকায়। আর বাজারে ধানের দাম ধান কাটার শ্রমিকের চাইতে কম মূল্য। ধানের দাম কম হওয়ার কারণে ধান কাটা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণেই তারা ধান কাটছিল না। অনেকে ধানের ক্ষেতে গরু দিয়ে খাইয়ে দিয়েছে। কিছুই করার নাই। কষ্ট করে ফসল ফলিয়ে যদি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয় তবে ধান চাষ বন্ধ করে দিতে হবে। অন্য ফসলে এর চাইতে বেশি লাভ পাওয়া যায়।

কৃষক হাসান মিয়া বলেন, ধানের দাম কম শ্রমিকের দাম বেশি, কি কারণে ধান কাটব। তাই মাঠের ধান মাঠেই ছিল। আজ ছাত্রলীগের ছেলেরা ধান কেটে দিয়েছে। খুব ভালো লেগেছে এই যুবকদের কাজ দেখে। আর এই কারণে ধানগুলা ঘরে উঠলো। ছাত্রলীগের মত সকল যুবসমাজ যদি এগিয়ে আসত তবে শ্রমিক সংকট থাকত না।

এ প্রসঙ্গ জেলা ছাত্রলীগর সভাপতি শিবলী সাদিক বলেন, শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির কারণেই কৃষক সমস্যায় পড়েছে। আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ছাত্রলীগের চারটি ইউনিটকে চার ভাগে ভাগ হয়ে এই কাজ করা হয়েছে। কষ্ট একটু হয়েছে তবে আনন্দও কম হয়নি। ভালো কাজের মজাই আলাদা। কৃষক বিপদমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম চলবে বলে জানান তিনি।