রমজানে রাতভর এবাদত-বন্দেগিতে সজাগ বাড়িট

পবিত্র রমজানে রাতভর নামাজ, জিকির, হামদ, নাত, ইসলামি চিন্তাবিদদের আলোচনা, দোয়া, তাহাজ্জুত ও মোনাজাতে সজাগ থাকে বাড়িটি। রাত সাড়ে নয়টা থেকে ভোররাত আড়াইটা পর্যন্ত এবাদত শেষে সেহেরি খেয়ে বিদায় নেন অতিথিরা।

নগরের নাসিরাবাদের দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের কবরস্থানের উত্তর পাশে ৩০ নম্বর বাড়ির দোতলায় পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের উদ্যোগে আস্তানায়ে ইছাপুরীতে চার বছর ধরে হয়ে আসছে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন।

সুফি মিজানুর রহমান বুধবার (২২ মে) রাতে আলোচনাকালে বলেন, বদর যুদ্ধের তাৎপর্য অপরিসীম। মানুষ যখন নেতৃত্বের প্রতি হৃদয় দিয়ে আনুগত্য করে, ভালোবাসে তখন আল্লাহ জয়কে সহজ করে দেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যের কারণে। জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে এদেশকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা।

৬ বছরের শিশু নোমাইর মিজান আমিরের সুললিত কণ্ঠে নাতে রাসুল (সা.) মুগ্ধ করে মুসল্লিদের।

মাওলানা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফী বলেন, রমজানের প্রতি রাতে আস্তানায়ে ইছাপুরীতে কোরআন, সুন্নাহ, এজমা, কেয়াসের আলোকে সারগর্ভ আলোচনা হয়। এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন সবাই।

এবাদত ও আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে খেজুর, জুস, চিপস, বাদাম ইত্যাদি হালকা খাবার দিয়ে চাঙা রাখা হয় মুসল্লিদের।

রাত যত বাড়ে এ মাহফিলে নগরের ইসলামি চিন্তাবিদদের আনাগোনাও বাড়তে থাকে। আনজুমান-এ-রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, মাওলানা খায়রুল বশর হাক্কানী, হজরত শাহসুফি আমানত খান (র.) দরগাহ মসজিদের সিনিয়র ইমাম ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার সিনিয়র প্রভাষক মাওলানা মো. আবুল হাশেম শাহ প্রমুখ যোগ দেন এ মজলিসে।

পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক আমির হোসেন সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, আমার আব্বা ইসলামের খেদমতে কাজ করছেন। সমাজকে এগিয়ে নিতে সমাজ সংস্কারকের ভূমিকা অপরিসীম। রমজানের প্রতি রাতে ইসলামি স্কলারদের আলোচনায় ইসলামের ইতিহাস ও শরিয়তের অজানা অনেক তথ্য উঠে আসে। এ ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ আমাদের ইমান ও আকিদাকে মজবুত করে।

মাওলানা নিজাম উদ্দিন আশরাফী বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি রাতে সুন্দর পরিবেশে শরিয়ত ও তরিকতের আলোকে এবাদত বন্দেগি হয় আস্তানায়ে ইছাপুরীতে। এখানকার ভক্ত-আশেকরা দিনভর অপেক্ষা করেন কখন রাত হবে।

দিলশাদ আহমেদ বলেন, রমজান কেন্দ্রিক এ মাহফিলের সূত্রে আরও বড় পরিসরে প্রতি চন্দ্রমাসের ১১ তারিখ রাতে মাহফিলে বারভি শরিফ হয়। প্রতি রাতে এশার নামাজ, তারাবি নামাজ, তাহাজ্জুত নামাজের পাশাপাশি মিলাদ, কিয়াম, হামদ, নাত, জিকির হয়। সবশেষে সেহেরি খেয়ে বিদায় নেন মুসল্লি ও অতিথিরা। এবার এ মাহফিলের বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন বড়পীর আবদুল কাদের জিলানির (র.) একজন বংশধরের আগমন।