স্কটল্যান্ড, উ. আয়ারল্যান্ডের আকাশে রহস্যময় ‘ফায়ার বল’

স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের আকাশে আকস্মিক উড়ে এলো ‘উল্কা’র মতো বস্তু। পৃথিবীর একেবারে কাছ দিয়ে উড়ে গিয়ে তা কোন এক স্থানে বিধ্বস্ত হয়েছে। বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- আসলে বস্তুটি কি? এটা কোথায় পৃথিবীতে আঘাত করেছে? এটা কি আসলেই কোনো উল্কাপিণ্ড নাকি মহাকাশের আবর্জনা (স্পেস জাঙ্ক)? এসব নিয়ে এখন স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে তোলপাড় চলছে। ইউকে মেটেওর নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করে বলেছে, বুধবার রাতে স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের কমপক্ষে ২০০ মানুষ ‘মহাজাগতিক এই বস্তুটি’ দেখতে পেয়েছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে এ সময় বস্তুটির ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এটি বিশাল আকৃতির এবং উজ্বল এক আলোর বল। স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের কয়েক শত অধিবাসী বলেছেন, রাতের আকাশ উজ্বল করে উড়ে গেছে বিশাল এক আলোর বল। এ বিষয়ে কয়েক শত ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। ১৭০টি শনাক্তকরণ ক্যামেরা তাক করেছে একটি নেটওয়ার্ক।

তাদের উদ্দেশ্য উল্কা, গ্রহাণু এবং মহাজাগতিক কোনো বস্তু যদি বৃটেনের আকাশের ওপর দিয়ে উড়ে যায়, তা শনাক্ত করা। তবে সর্বশেষ এই বস্তুটি কি তা নিশ্চিত করেনি ইউকে মেটেওর নেটওয়ার্ক। তারা বলেছে, এটা উল্কা, গ্রহাণু অথবা মহাজাগতিক কোনো ধ্বংসপ্রাপ্ত পদার্থ কিনা তা জানতে তদন্ত করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মতে উল্কা বা গ্রহাণু হলো মহাজাগতিক বস্তু। এর আকৃতি ছোট গ্রহাণু থেকে ক্ষুদ্রতর শস্যের মতো হতে পারে। এদেরকে মহাকাশের পাথর বলেও কেউ ভাবতে পারেন। আবার মনুষ্য সৃষ্ট স্যাটেলাইটের অব্যবহৃত কোনো অংশ যদি মহাকাশে ভাসতে থাকে তাকে ইংরেজিতে ‘স্পেস জাঙ্ক’ বা মহাকাশের আবর্জনা বলা হয়। এসব পৃথিবীর চারপাশে কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। ঘুরতে ঘুরতে মাঝেমধ্যে তা আবহাওয়া মণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। মহাকাশের আবর্জনা হলো কৃত্রিম। এর কোনো কাজ নেই। হতে পারে তা কোনো ক্ষুদ্র অংশ, যা পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের আবহাওয়া মণ্ডলে প্রবেশ করে। উল্কা, গ্রহাণু এবং মহাজাগতিক এসব আবর্জনা (জাঙ্ক) একই রঙ সৃষ্টি করে তীব্রতার সঙ্গে জ্বলতে থাকে। কারণ উল্কা, গ্রহাণুর বেশির ভাগে এবং অ্যালয়ে বা সংকর ধাতুতে এমন কিছু উপাদান থাকে যা তাকে দ্রুত জ্বলতে সাহায্য করে।

তাই দ্রুততার সঙ্গে বলা যাচ্ছে না ওটা কি ছিল। বেশির ভাগ মহাজাগতিক ‘স্পেস জাঙ্ক; যখন পৃথিবীর আবহাওয়া মণ্ডলে প্রবেশ করে তখন তা ঘন্টায় ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটতে থাকে। অন্যদিকে উল্কা বা গ্রহাণু ছোটে ঘন্টায় ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার কিলোমিটার বেগে।
গ্লাসগো সায়েন্স সেন্টারের সায়েন্স কমিউনিকেটর এবং জ্যোতির্বিদ স্টিভ ওয়েন্স’ও ওই ফায়ারবল প্রত্যক্ষ করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বিবিসি রেডিও স্কটল্যান্ড-এর ‘গুড মর্নিং স্কটল্যান্ড’ প্রোগ্রামে বলেছেন, এটা স্কটল্যান্ডেরই কোথাও পতিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু তেমনটা মনে হয় না। তবে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে ইউকে মেটেওর নেটওয়ার্ক।