আইরিশদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা

স্পোর্টস ডেস্ক

নিয়মরক্ষার ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৯৩ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়েও হারলো স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড। আইরিশদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। বড় রান তাড়ায় লিটন, তামিম, সাকিবের ফিফটিতে ৪৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে। বল বাকি ছিল আরও ৪২টি। এই ম্যাচ হাতে রেখে আগেই সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। আগামী ১৭ মে ফাইনাল টাইগারদের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আয়ারল্যান্ডের দলপতি উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। বুধবার (১৫ মে) ডাবলিনে বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে চারটায় শুরু হয় ম্যাচটি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে আইরিশরা তোলে ২৯২ রান। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ওপেনার পল স্টার্লিং। আবু জায়েদ রাহি নিয়েছেন ৫ উইকেট।

২৯৩ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতে আসে ১১৭ রান। ফিফটি করে বিদায় নেন তামিম ইকবাল (৫৭)। ইনিংসের ১৭তম ওভারে বয়েড রানকিনের ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে তামিম ৫৩ বলে ৯টি বাউন্ডারি হাঁকান। এরপর সাকিবের সঙ্গে জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন লিটন দাস। ইনিংসের ২৩তম ওভারে ম্যাককার্থির বলে বোল্ড হন ৬৭ বলে ৯ চার, এক ছক্কায় ৭৬ রান করা লিটন। তার আগে সাকিবের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৪৩ রান। দলীয় ১৬০ রানের মাথায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায়।

এরপর সাকিবের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন মুশফিক। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে রানকিনের ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩৩ বলে ৫টি বাউন্ডারিতে ৩৫ রান করা মুশফিক। দলীয় ২২৪ রানের মাথায় টাইগাররা তৃতীয় উইকেট হারায়। ৩৬তম ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন সাকিব। এরপর রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। তার আগে ৫১ বলে চারটি বাউন্ডারিতে করেন ৫০ রান। ৪১তম ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ১৪ রান করা মোসাদ্দেক হোসেন। দলীয় ২৭৮ রানে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৯ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় করেন অপরাজিত ৩৫ রান। সাব্বির রহমান ৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। ৪৩ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে টাইগাররা।

বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ দুটি বাদ দিলে এটা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের শেষ দুই ম্যাচের একটি। নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার আর পরখ করে নেওয়ার আরেকটি সুযোগ পায় টাইগাররা। ফাইনাল ম্যাচটি জিতলে সুযোগ থাকছে প্রথম কোনো ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জেতার। এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে একাদশে ফিরেছেন লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, সাইফউদ্দিন এবং রুবেল হোসেন। আগের ম্যাচে থাকলেও এই ম্যাচের একাদশে নেই মেহেদি হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, মোস্তাফিজুর রহমান এবং মোহাম্মদ মিঠুন।

এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুটা দারুণ করেছিল মাশরাফির দল। ক্যারিবীয়ানদের ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দেয় টাইগাররা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল আইরিশরা। বৃষ্টি আর খারাপ আবহাওয়ার কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। আর নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আবারো ক্যারিবীয়ানদের সহজেই হারিয়ে দেয় টাইগাররা। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ৫ উইকেটের জয় পায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি দুই দেখাতেই জয় তুলে নেয়। প্রথম ম্যাচে বোনাস সহ পায় ৫ পয়েন্ট। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হারলেও নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আবারো আইরিশদের হারালে উইন্ডিজদের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৯।

এদিকে, বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়ানদের হারিয়ে পায় ৪ পয়েন্ট। আইরিশদের বিপক্ষে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে ২ পয়েন্ট নিয়ে টাইগারদের পয়েন্ট হয় ৬। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আরেকবার ক্যারিবীয়ানদের হারালে টাইগারদের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১০। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থেকে ফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। দুইয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজও ফাইনাল নিশ্চিত করে। আগামী ১৭ মে বাংলাদেশ-উইন্ডিজ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।

আয়ারল্যান্ড একাদশ: পল স্টার্লিং, জেমস ম্যাককোলাম, অ্যান্ডি বালবির্নি, উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড, কেভিন ওব্রায়েন, মার্ক অ্যাডাইর, গ্যারি উইলসন, জর্জ ডকরেল, বয়েড রানকিন, ব্যারি ম্যাককার্থি, জশ লিটল।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি, সাব্বির রহমান, রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।