পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের মুহুরীজোত গ্রামে বাঘের হামলার ঘটনার পর স্থানীয়দের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে সেই বাঘ দুটিকে ধরতে তৎপর হয়ে হঠেছে প্রশাসন ও বন বিভাগ। ইতোমধ্যে বাঘ দুটি এবং তাদের বাচ্চাগুলোকে ধরতে প্রস্তুত করা হয়েছে খাঁচা।
আর অন্যদিকে প্রায় চার একর জমির উপর গড়ে ওঠা জঙ্গলাকীর্ণ পরিত্যক্ত সেই চা বাগান স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিষ্কার করছে প্রশাসন।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে মুহুরীজোত গ্রামের সেই জঙ্গলাকীর্ণ পরিত্যক্ত চা বাগানের আশপাশ ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন, পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আক্কাস আহম্মদ ও তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুল হক, তেঁতুলিয় মডেল থানার ওসি জহুরুল ইসলাম, সাতমেড়া ও দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুহুরিজোত গ্রামের শেষ প্রান্তের প্রায় চার একরের পরিচর্যাবিহীন জঙ্গলাকীর্ণ চা বাগান এলাকায় শত শত উৎসুক মানুষের ভিড়। দূর-দূরান্ত থেকে তারা বাঘ দেখতে এসেছেন। ওই চা বাগানের ঝোপঝাড়ে বাঘ লুকিয়ে রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এদিকে পরিচর্যাবিহীন জঙ্গলাকীর্ণ চা বাগানের অতিরিক্ত ডাল-পালা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কারে প্রশাসনের সহযোগিতায় নেমে পড়েছে স্থানীয় যুবকেরা। কেউ কেউ চা বাগানের ভেতরে ঢুকেও বাঘের দেখা পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, মাসখানেক আগে বাঘগুলো সীমান্তবর্তী একটি ব্রিজের নীচ দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর পর থেকে সেই চা বাগানেই বসবাস শুরু করে। এর পর গত বুধবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় একটি গরুর ওপর হামলা করলে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সবার মধ্যে বাঘ আতঙ্ক শুরু হয়। এরপর ওই এলাকার কেউ কেউ আকারে লম্বা ও গায়ে কালো ছাপ থাকা বাঘ ওই চা বাগানের পাশের জঙ্গলে দেখতে পান।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বাঘগুলোকে জীবিত ধরতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে টিম এসেছে। আশাকরি জঙ্গল পরিষ্কার করা হলে বাঘগুলোকে ধরতে আমরা সক্ষম হবো।
আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল কালাম নামে ওই এলাকার বাসিন্দা জানান, প্রশাসনের নির্দেশে আমরা জঙ্গলের গাছপালা জঙ্গল পরিষ্কার করছি। এরই মধ্যে চা বাগানের ভেতর থেকে মরা পশুর দুর্গন্ধ আসছে। মনে হচ্ছে বাঘগুলো চা বাগানের ভেতরে পশু খেয়ে ফেলে রেখেছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ হোসেন জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তারা বাঘ ধরা বা বাঘের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন। এলাকায় পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আশা করা যায় সবার সহযোগিতায় বাঘগুলোকে আমরা ধরতে সক্ষম হবো।