এমপিওভুক্তিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির পদত্যাগ দাবি করেছেন বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরাম চট্টগ্রাম বিভাগের নেতারা।
রোববার (২১ জুন) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত শুধু বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সের অনুমোদন দিচ্ছে, কিন্তু শিক্ষকদের বেতনের দায়িত্ব নিচ্ছে না। অথচ একই কলেজের ইন্টারমিডিয়েট, ডিগ্রীর শিক্ষকরা এমপিও পান, মাদ্রাসায় কামিল পর্যন্ত এমপিও আছে, শুধু আমাদের নেই। এটা চরম বৈষম্য, যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়।
তিনি বলেন, কলেজ থেকে যে সামান্য ভাতা দেওয়া হতো তাও এখন ৯০ ভাগ কলেজে ফান্ড না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে ২৫শ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে, যা একটি এফডিআর করে তার সুদ থেকে আমাদের বেতন দিতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ দাবির কারণ ব্যাখ্যা করে বলা হয়, তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০১৭ সালে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে একটি সুপারিশ আসে (স্মারক নং: ০৩.০৭৪.০৩৭.০৪৮.০০.০০৯.২০১৭-৩১৯), এবং এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত চেয়েছিলো। কিন্তু তিনি কোনও মতামত দেননি।
‘এছাড়া ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোকে শতভাগ বেতন দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়। আজ পর্যন্ত এসব কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ এসে তদারকি করেননি, এই শিক্ষকরা আসলে কত টাকা বেতন পাচ্ছেন’।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, পরীক্ষার খাতা কাটার সম্মানী বাবদ ২০১৮ সালের অনার্স প্রথম বর্ষের টাকা আমরা এখনও পাইনি। কেন্দ্রীয়ভাবে এসব বিষয়ে আমরা বলে আসছি, কিন্তু ভিসি কিছুই আমলে নিচ্ছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সর্বশেষ জনবল কাঠামো ২০১৮ সংশোধনীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও’র বিরোধীতা করেন এবং শিক্ষকদের বলেন, ‘তোমরা প্রাইভেট কলেজে কেন এসেছ? বিসিএস দাওনি কেন?’ একটি দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে কিভাবে তিনি এসব কথা বলেন! আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ডিসির মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছি এবং তাদের সঙ্গে বৈঠক করে যখন সবকিছু গুছিয়ে আনি, তখনই ভিসির বিরোধিতায় সব ভেস্তে যায়। তাই এই মুহূর্তে এমপিওভুক্তিতে বাধা দেওয়ার জন্য আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স শিক্ষক ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সহ সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, হুমায়ুন করিম, নুর নবী, মাকসদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোমেন দে, মোহাম্মদ রাসেল, কাজী এমদাদুল হক, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সুকান্ত নন্দী, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক রিম্পা মুৎসুদ্দী, মোহাম্মদ মামুন, প্রচার সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, প্রকাশনা সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, মোয়াজ্জেম হোসেন।