ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে দলীয়ভাবে নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হওয়ার মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলটির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে পেশাজীবীদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এই কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না, যেন রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ পায়। পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে এখনো রাষ্ট্র থেকে লুণ্ঠন করা জনগণের পকেট থেকে লুণ্ঠন করা হাজার হাজার কোটি টাকা রয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ার অর্থ সারাদেশে ঘাঁপটি মেরে থাকা পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।
বর্তমানে সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করে ফেলা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, যারা সংস্কার শেষে নির্বাচনের কথা বলছেন, তারা সংস্কার বোঝেন না। সংস্কার সব সময় চলমান। সংবিধানে উল্লেখ থাকার পরও আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট হয়েছিল। পলাতক স্বৈরাচার সংবিধান মানেনি।
রাজনৈতিক অঙ্গনে গৌণ ইস্যুকে মুখ্য ইস্যু বানাতে গিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে সংশয় তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করেন তারেক রহমান।
রাষ্ট্রে সিভিল সোসাইটি ও পেশাজীবীরা দুর্বল থাকলে দেশ ভালোভাবে চলতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রাজনীতি একটি ঘর হলে বুদ্ধিজীবীরা তার খুঁটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত সময় আয়না ঘরসহ ফ্যাসিবাদের অপশাসনের দীর্ঘ সময় এই বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ তাদের দোসরে পরিণত হয়েছিল।
এর আগে এই ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত ভোটের আয়োজনই শ্রেয়। গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ সুগম করতে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে, যেন এই পথ সুগম হয়।
এ সময় তিনি বলেন, আবেগের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমাদেরকে বাস্তববাদী চিন্তা করতে হবে, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হবে।
আওয়ামী অপশাসনের বিলুপ্তিতে স্বস্তি প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই পেশাজীবী সমাবেশ এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আনন্দের এই জন্যই যে আমরা অনেক দিনপর প্রায় ১৫ বছর পরে একটা মুক্ত পরিবেশে, ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে আমরা এই ইফতার মাহফিলে আয়োজন করতে পেরেছি।