বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে বিএনপি নেতাদের ইফতার

ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এই ইফতারে ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জন ড্যানিলোভিজ, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আহমেদ মারুফ, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব এক টেবিলে বসে ইফতার করেন।

ইফতার মাহফিলে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ভারতের হাইকমিশার প্রণয় কুমার ভার্মা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল উলিয়াম মিলার ছাড়াও রাশিয়া, জাপান, কানাডা, সংযুক্ত আবর আমিরাত, নরওয়ে, সুইডেন, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালী, দক্ষিন কোরিয়া, নেপাল, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন। এছাড়াও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনীতিকরাও ছিলেন এই আয়োজনে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইফতারে কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা জানান। ইফতারের আগে বিএনপি মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

ইফতারপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এসব মানুষ বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গত ১৫ বছর জীবন উৎসর্গ করেছেন। যারা গুলিতে স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে গেছেন তার প্রতি তিনি সহানুভূতি প্রকাশ করেন তিনি। ৫ই জুলাই শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দিনের কথাও তুলে ধরেন ফখরুল। বলেন, ৫ই আগস্ট গণবিস্ফোরণ দেখা দিয়েছিল। দীর্ঘদিনের ফ্যাসিস্ট শাসক হাসিনা রেজিমের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছিল সেদিন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা ছিল বাংলাদেশের জনগণের গহণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের অংশ। এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে বিএনপি। জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনের অধীনে হত্যা করা হয়েছে ১৪০০ মানুষকে। এর মধ্যে আছেন নারী ও শিশু। জুলাইয়ের আন্দোলন চলাকালে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। এই দলটির অনেক নেতা জীবন উৎসর্গ করেছেন। এসময় মির্জা ফখরুল পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বলেন, বাংলাদেশ থেকে ফিলিস্তিন- সব জায়গায় মুসলিমরা ধৈর্য, আত্মত্যাগ ও ন্যায়বিচারের জন্য আল্লাহর দরকারে প্রার্থনা করছেন। ১৫ বছরের ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে মুক্তভাবে নিশ্বাস নেয়া, একত্রে বসার সুযোগ যাওয়ার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়া অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, শফিক রেহমান, ড. শাহিদুজ্জামান, মেজর জেনারেল মনিরুজ্জামান, ড. বোরহান উদ্দিন, সংস্কার কমিশনের ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ড. বদিউল আলম মজুমদার, কামাল আহমেদ, ড. তোফায়েল আহমেদ, ডা. জাহিদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী মনির হায়দার এই আয়োজনে অংশ নেন।
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক যুগান্তরের কবি আব্দুল হাই শিকদার, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, দৈনিক দেশ রুপান্তরের সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল, ডেইলি সানের সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, দৈনিক কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর, বিজন কান্তি সরকার, জহির উদ্দিন স্বপন, তাজভীরুল ইসলাম, ড. এনামুল হক চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, আন্তর্জাতিক কমিটি সদস্য তাবিথ আউয়াল, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, মাহমুদা হাবিবা, এডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল ইফতারে অংশ নেন।

ইফতার এবং মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকরা নৈশভোজেও অংশ নেন।