চিরশত্রু বা চিরবন্ধু বলে কোনো বিষয় এখন আর নেই উল্লেখ করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে নতুন করে ভাববার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের কর্মসূচিতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা কারও করুনা নয়, এটা দেশের মানুষের অধিকার। অথচ ন্যায্য পানি পাওয়ার জন্যই আন্দোলন করতে হচ্ছে। পানি বণ্টন নিয়ে প্রতিবেশী দেশ অপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ করছে। ফারাক্কার পর তিস্তা আরেকটি অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। ভারতের অপ্রতিবেশীসুলভ আচরণে তিস্তা পাড়ের মানুষ বন্যা, ভাঙনের শিকার।
এ সময় শেখ হাসিনা নিজেকে ভারতের সেবাদাসী করে রেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত শুধু পলাতক স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে, বাংলাদেশের জনগণকে মনে রাখেনি। পলাতক স্বৈরাচারকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। কারণ জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে নিজেকে ভারতের সেবাদাসী করে রেখেছিলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের কোনো স্বার্থই রক্ষা করতে পারেনি উল্লেখ করে তারেক রহমান আরও বলেন, জনগণের রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে মাফিয়া সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল আওয়ামী লীগ। সব আন্তর্জাতিক রীতি নীতি উপেক্ষা করে ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছিল তারা। তাই ন্যায্যতা নিশ্চিতে এখন ভারতের সঙ্গে হওয়া সব একতরফা চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করা দরকার। ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিজ দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশ আর ফেলানির লাশ দেখতে চায় না। এছাড়া ভারত তিস্তা চুক্তি করতে অনীহা দেখালে আমাদেরকেই বাঁচার পথ খুঁজে নিতে হবে। জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক ফোরামে দাবি তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি প্রতিবেশীর সঙ্গেও কূটনৈতিক আলোচনা করতে হবে।
উত্তরাঞ্চলকে মরুকরন থেকে বাঁচাতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে এ বিষয়ে সবধরনের উদ্যোগ নিবো’।
দেশের রাজনীতিতে আর স্বৈরাচারের পুনর্বাসন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য আওয়ামী লীগকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ করে দিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো হটকারী সিদ্ধান্তের কারণে পলাতক স্বৈরাচার যেন পুনর্বাসিত না হয়। এ জন্য নির্বাচন বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
এদিকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে উত্তরবঙ্গের ১১টি স্থানে আজ পদযাত্রাসহ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দুপুরের কর্মসূচির পর সন্ধ্যায় কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধাসহ উত্তরের সব জেলার মানুষ দাবি আদায়ে নদীপাড়ে মশাল মিছিল করেন।