সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও প্রতিনিধি: কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকার সংক্ষুব্ধ ১০ জন ব্যক্তি এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি চুপিসারে এবং নীতিমালা না মেনে গঠন করা হয়। দেশসেরার স্বীকৃতি পাওয়া এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে ফেসবুকে তীব্র নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হলে ২৩ ডিসেম্বর অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের সময় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন না। এলাকার ২/৩ জন ব্যক্তি তাকে ডেকে নিয়ে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।
কেন্দ্রে কর্মরত এফডব্লিউভি নাসরিন আকতারের সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায়, ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের জন্য তিনি কোন সভা আহবান করেননি। বর্ণিত তারিখে তিনি ও তাঁর স্টাফ নিয়মিত দায়িত্বপালন করছিলেন, এ সময় ৪/৫ জন উপস্থিত হয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের কথা বলেন এবং তাদের মধ্যে একজন রেজুলেশন খাতা নিয়ে লেখালেখি করেন।
সূত্র জানায়, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে কমিটি গঠনের ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকলেও তা প্রতিপালন হয়নি। কমিটি গঠনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার/উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার কোন সভা আহবান করেননি।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের নীতিমালার ৯৯ পৃষ্ঠায় ৪ নং ক্রমিকে বর্ণিত সদস্য স্থানীয় কলেজের অধ্যক্ষ/উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক/প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিধি অনুসৃত হয়নি। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি (ক্রমিক নং ৬, পৃষ্ঠা ৯৯) নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। তিনি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে আছেন এমন কোন লিখিত প্রমাণক জমা নেওয়া হয়নি। ক্রমিক ৪, ৫ (পৃষ্ঠা ৯৯) এ বর্ণিত সদস্যদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত হওয়ার বিধান রয়েছে (সদস্য নির্বাচনের নীতিমালা, পৃষ্ঠা ১০০)। চেয়ারম্যান তাদেরকে মনোনীত করেছেন এমন কোন লিখিত প্রমাণক নেই। কিশোর প্রতিনিধি (ক্রমিক ১৩, পৃষ্ঠা ৯৯) মনোনীত করার ক্ষেত্রে কিশোরের সংজ্ঞায় বর্ণিত বয়স উপেক্ষা করা হয়েছে। কো-অপ্ট সদস্য মনোনীত করার ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুসৃত হয়নি। সদস্য নির্বাচনের নীতিমালা, পৃষ্ঠা ১০০ এ উল্লেখ আছে যে, কমিটি ইচ্ছা করলে স্থানীয় মহিলা সমাজকর্মীদের মধ্য থেকে ২জনকে কো-অপ্ট সদস্যরূপে মনোনীত করতে পারবেন। অথচ মহিলা বাদ দিয়ে ৩জন পুরুষকে কো-অপ্ট সদস্য মনোনীত করা হয়েছে। তাছাড়া, কমিটি গঠনের পর পরবর্তী বৈঠকে কমিটি কর্তৃক কো-অপ্ট সদস্য নেওয়ার বিধান প্রচলিত থাকলেও কমিটি গঠনের রেজুলেশনেই কো-অপ্ট সদস্য মনোনীত করা হয়েছে। কমিটি গঠনের রেজুলেশনে ৭ জনের স্বাক্ষর থাকলেও কমিটি গঠনের সময় ৪/৫ জন উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন।
দেশসেরার স্বীকৃতি অর্জনকারী এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন এভাবে হতে পারে না বলে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিমল চাকমা বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক প্রতিবেদন আকারে অবহিত করার জন্য উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে চলতি সপ্তাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাঈনুদ্দিন মোর্শেদ।