রাউজানের পাহাড়ী এলাকা সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা

শফিউল আলম, রাউজানঃ চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার পাহাড়ী এলাকা পাহাড়তলী ইউনিয়নের মহামুনি, বহলপুর, জগৎপুর আশ্রম, সন্দীপ পাড়া, নাজিরের টিলা, শাহেদুল্ল্রাহ কাজী পাড়া, কদলপুর ইউনিয়নের জয়নগর ভোমরপাড়া, কমলার টিলা, আশরফ শাহ মাজার, দক্ষিন শমশের পাড়া, শমমের পাড়া, কালকাতর পাড়া, ৭নং রাউজান ইউনিয়নের পুর্ব লাউজান, রাণী পাড়া, শমশের নগর, ভোমরঢালা, রশিদরপাড়া, জয়নগর বড়ুয়া পাড়া, চিকনছড়া, মুখছড়ি, রাউজান রাবার বাগান, রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পুর্ব রাউজান, কাজী পাড়া, ঢালারমুখ, রাবার বাগান, জঙ্গল রাউজান, আইলী খীল, ওয়াহেদের খীল, দাওয়াত খোলা, ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া, ডাবুয়া রাবার বাগান, কলমপতি, সুড়ঙঙ্গা, রাধামাধবপুর, পুর্ব ডাবুয়া, হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া রাবার বাগান, শিরনী বটতল, অলির টিলা, এয়াসিন নগর, জানিপাথর, গলাচিপা, উত্তর আইলী খীল, বৃকবানপুর, বৃন্দ্বাবনপুর, সিংহরিয়া, ওয়াহেদ্যা খীল, হলদিয়া রাবার বাগান ।

রাউজানের এসব পাহাড়ী এলাকার সীমনায় রয়েছে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের কচু পাড়া, চৌধুরী পাড়া, বালুখালী, মনাই পাড়্,া ডাক্তার ছোলা, ডাইলা পাড়া, গোদার পাড়, ডিলাইট, মনাই পাড়া, তলতলা, নাকাটা, চিকনছড়া । এসব এলকার কদলপুর ও পাহাড়তলী ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকার সীমনায় রাঙ্গুৃনিয়া উপজেলার পাহাড়ী এলাকা পোমরা, বেতাগী। রাউজান, রাঙ্গুনিয়া কাউখারীর পাহাড়ী এলাকায় রাউজানের বিভিন্ন এলাকার মানুষের রয়েছে খামার বাড়ী । খামার বাড়ীগুলোতে ও আশে পাশের পাহাড়ী গড়ে উঠেছে বসতবাড়ী । সন্ত্রাসীরা খামার বাড়ী ও খামার বাড়ীর পাশে গড়ে উঠা বসতিতে আস্তানা গড়ে তুলেছে । পাহাড়ের খামার বাড়ী ও পাশের বসতিতে সন্ত্রাসীরা আস্তানা গড়ে তুললে ও স্থানীয় বাসিন্দ্বারা জাণার পর ও তারা মুখ খুলতে সাহস পায়না । দুর্গম পাহাড়ী এলাকার আস্তানা থেকে এসে রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ সংগঠিত করে পাহাড়ী এলাকার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে তাদের আস্তানায় চলে যায় । সন্ত্রাসীরা পাহাড়ী এলাকার আস্তানায় থাকলে ও তাদের সোর্স রয়েছে রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা সদর প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অফিসের আশে পাশে । আ্ইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা কখন কোথায় যা্েচ্ছ ও কারা কি করছে তা মোবাইল ফোনে সন্ত্রাসীদের কাছে মুর্হুতের মধ্যে পৌছে দেয় তাদের সোর্সরা ।

রাউজানের বড়ঠাকুর পাড়ার বাসিন্দ্বা যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, মানিক কে গত ২০০২ সালে অপহরন করে বাড়ী থেকে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা । জাহাঙ্গীর আলম ও মানিককে কাউখালী উপজেলার গহিন অরণ্যে নির্মমভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা । কদলপুরের বাসিন্দ্বা আকতার হোসেনকে কাউখালী উপজেলার মনাইপাড়ায় পাহাড়ের মধ্যে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা । গত ২০০২ সালে পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দ্বা যুবলীগ নেতাকে অপহরন করে নিয়ে রাউজানের কদলপুর শমমের পাড়া এলাকার অদুরে কাউখালী উপজেলার গহিন অরণ্যে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা । গত ২০০৩ সালে রাউজানের রশিদরপাড়া এলাকার বাসিন্দ্বা ৭নং রাউজান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার আকতার হোসেন এলাকার একটি বিয়ে অনুষ্টান থেকে আসার পথে তাকে অপহরন করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা । অপহরনের পর সাবেক মেম্বার আকতার হোসনকে নির্মমভাবে হত্যা করে তার লাশ ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা । অপহরনের তিনদিন পর রাউজানের পুর্ব রাউজান ভোমর ঢালা খাল থেকে সাবেক মেম্বার আকতার হোসের লাশ উদ্বার করে রাউজান থানা পুলিশ । গত এক বৎসর পুর্বে রাউজানের কদলপুর মুরগীর ফার্ম থেকে হৃদয় নামের এক কর্মচারীকে অপহরন করে নিয়ে সন্ত্রাসীরা মুক্তিপণ দাবী করেন । সন্ত্রাসীদের দাবী করা মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর সন্ত্রাসীরা হৃদয়কে নির্মমভাবে হত্যা করে তার শরীর খন্ড বিখন্ড করে ফেলে। পরে কদলপুর আশরফ শাহ মাজারের পুর্বে কাউখালী উপজেলা গহিন অরণ্যে পাহাড় থেকে হৃদয়ের হাড় গোড় কংকাল উদ্বার করে পুলিশ । অপহরনকারী এক সদসকে প৪ুলিশ আটক করে থানায় আনার সময়ে পুলিশের কাছ থেকে অপহরনকারী চক্রের সদস্যকে ছিনিয়ে নিয়ে উত্তোজিত জনতা পিঠিয়ে হত্যা করে।

রাউজানের পুর্ব রাউজান ভোমর ঢালা এলাকায় জেলা ও রাউজান থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে অভিযান চালাতে গেলে দুর্ধষ ডাকাত দল সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে পুলিশের বন্দ্বুক যুদ্ব সংগঠিত হয় । ঐ সময়ে ৬ জন দুর্ধষ ডাকাত নিহত হয় । পুলিশ ডাকাত দলের ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্বার করে। গত ২০০৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের টিলা পরিবেষ্টিত এলাকায় র‌্যব অভিযান চালায় । র‌্যাবের অভিযান্রে সময়ে র‌্যাবের সাথে শীর্ষ সন্ত্রাসী জানে আলম ও তার সহযোগীদের বন্দ্বুকযুদ্ব সংগঠিত হয় । ্ ঐ সময়ে র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে শীর্ষ সন্ত্রাসী জানে আলম ও তার ৯ সহযোগী নিহত হয় । অন্তবর্তী সরকারের শাসন আমলে গত ৮ মাসে রাউজানে খুন হয় ১২ জন। সর্বশেষ রাউজানের পুর্ব রাউজান গাজী পাড়ার বাসিন্দ্বা মোঃ আলমের পুত্র যুবলীগ নেতা মোঃ ইব্রাহিমকে বাড়ীর অদুরে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা । মোঃ ইব্রাহিমকে গুলি করে হত্যা করে কদলপুর পাহাড়ী এলাকার সড়ক দিয়ে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে চলে যায় । সম্প্রতি রাউজানে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনা নিয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা স্বরাস্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অবঃ জাহাঙ্গীর আলমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, স্বরাস্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অবঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাউজানের পাহাড়ী এলাকার সাথে রাঙ্গামাটি জেলার পাহাড়ী এলাকার সীমানা । সন্ত্রাসীরা রাউজানের অপরাধ সংগঠিত করে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় চলে যায় । দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব, পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। রাউজানে একের পর এক খুন আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার পর গত ২৪ এপ্রিল রাউজানের ৭নং রাউজান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যলয়ে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে সভার আয়োজন করা হয় । সভায় রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিসান বিন মাজেদ তার বক্তব্যে বলেন, রাউজানে অনেক জ্ঞানী গুনি ব্যক্তির জম্মভুমি। জ্ঞানী গুনি ব্যক্তিদের জম্মভুমি রাউজানে একের পর এক খুন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংগঠিত হয়ে রাউজান সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে ।

রাউজানের পাহাড়ী এলাকা কাউখালী উপজেলার সাথে সীমান্ত হওয়ায় সন্ত্রাসীরা অপরাধ সংগঠিত করে দুর্গম পাহাড়ী এলাকার দিকে চলে যায় । সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে সেনাবাহিনীর সদস্য র‌্যাবকে অভিযান চালানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে । রাউজানকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের সহায়তা কামনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিসান বিন মাজেদ ।