চবির মূল ক্যাম্পাসে চারুকলা স্থানান্তরে আবারো আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

চারুকলাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফেরাতে আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ব্যানার নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। এরপর স্লোগানের সঙ্গে কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে ৩১ মার্চের মধ্যে চারুকলা ক্যাম্পাসে ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রশাসন এবং ১ এপ্রিল থেকে চারুকলার সব কার্যক্রম মূল ক্যাম্পাসে শুরু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এর বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। এই অবস্থার জন্য শিক্ষক সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা ‘ছিলাম, আছি, থাকবো, একসঙ্গে লড়বো’; ‘আবু সাঈদ, মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’; ‘দাবি মোদের একটাই, চারুকলা ক্যাম্পাসে চাই’; ‘শিক্ষকদের তালবাহানা, মানি না-মানবো না; ‘২৩০০ একর জানে না, চারুকলার ঠিকানা’; ‘চারুকলার সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও-গুড়িয়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

চারুকলার ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মেহেদি বলেন, ‘আমাদের গত বছরের ডিসেম্বরের আন্দোলনে বলা হয়েছিল যে এ বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে ক্যাম্পাসের ক্লাসে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এই প্রশাসনও পূর্বের প্রশাসনের মতোই ব্যর্থ। একঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

তিনি আরও বলেন,‘আমাদের ইন্সটিটিউটের পরিস্থিতি এমন হইছে যে একটা প্রত্যয়ণপত্র দেয়া হচ্ছে না। একটা আওয়ামী স্বৈরাচারী সিন্ডিকেটের জন্য এই দাবি পাস হচ্ছে না।’

২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আশিক বলেন, ‘এপ্রিলে চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিলো। কিন্তু আমরা এটা শুনেছি কিছু ফ্যাসিবাদের স্বৈরাচারী দালালের সিন্ডিকেটের জন্য আমরা ক্যাম্পাসে ফিরতে পারছি না। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি এই মাসের মধ্যে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে এনে যাবতীয় কার্যক্রম শুরু করতে হবে।’

১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাফিজা তালুকদার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুস্থ পরিবেশ সেটা আমরা মেহেদীবাগের ওই সংকীর্ণ জায়গায় পাচ্ছি না। আমাদের অন্যান্য সহপাঠীরা ২৩০০ একরে এসে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা এখানে ফিরতে চাই। কারণ আমরা ওখানে কোনো সুবিধাই পাচ্ছি না। ক্লাসরুমগুলো দুর্বল। যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে।’

জানা যায়, আবাসন সংকট, জীবনযাত্রার অত্যধিক খরচ, চারুকলার ভবনসমূহের বেহাল দশাসহ অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে আন্দোলনের পর প্রশাসন থেকে ৩১ মার্চের মধ্যে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি। তাই আবারও বিক্ষোভে নামেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে আরও কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন তারা।