বন্দর থেকে বিশেষ সুবিধায় পণ্য ছ্ড় ১৬ মে পর্যন্ত

স্টোররেন্ট বা মাশুল ছাড়াই সব ধরনের আমদানি পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় নেওয়ার সুযোগ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গতকাল ৪ মে মাশুল ছাড়ের সুযোগ শেষ হওয়ার প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার নতুন এই আদেশ দিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরফলে গত ২৬ মার্চ থেকে ১৬ মে বিনামাশুলে পণ্যছাড়ের এই সুযোগ পেলেন দেশের সব ধরনের পণ্য আমদানিকারকরা।

উল্লেখ্য, স্টোররেন্ট বাবদ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিপুল রাজস্ব আয় করলেও বন্দর গতিশীল করার স্বার্থে বড় ধরনের এই ছাড় দিয়েছে। বিনামাশুলে পণ্যছাড়ের সুযোগ দেওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য ছাড়ের পরিমাণ এখন স্বাভাবিক সময়ের মতোই হচ্ছে। কিন্তু বন্দর স্বাভাবিক হতে আরো এক থেকে দেড়মাস লাগবে।

জানতে চাইলে বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পণ্য ছাড় করছেন বন্দর থেকে। প্রক্রিয়াটি আরো দ্রুত করতেই সময় বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি ব্যবসায়ীরা বাকি পণ্য এই সময়ের মধ্যেই ছাড় নিয়ে নিজের গুদামে নিয়ে যাবেন।’

তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে ছাড় না নিলে আগামী ১৬ মের পর থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ স্বাভাবিক ভাড়া আদায়ে বাধ্য হবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার রাখার ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার একক এর বিপরিতে অতিরিক্ত কন্টেইনার জমে যাওয়ায় বন্দরের কন্টেইনার উঠানামা, জাহাজ জেটিতে ভিড়ার কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দেয়। একটি জাহাজ জেটিতে ভিড়তে আগে যেখানে ৩/৪দিন লাগতো এখন সেখানে লাগছে ১৫ দিন। আর জেটিতে পণ্য নামিয়ে জাহাজ ছাড়তে লাগতো ৩ দিন এখন সেখানে লাগছে ৫/৬ দিন। এই অবস্থায় বন্দরের ভিতর ইয়ার্ড থেকে আটকে থাকা কন্টেইনার সরানোর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রথমে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে পণ্য স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিচ্ছিন্ন আদেশের কারণে সেটিও বাধাগ্রস্ত হয়। অবশ্য পরে এসে সব কন্টেইনার সরানোর আদেশ দেয়। কন্টেইনার দ্রুত সরানোর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ ২৬ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত স্টোররেন্ট শতভাগ মাফ করে দেয়; কিন্তু কোনো আমদানিকারক তাতে সাড়া দেয়নি। এরপর বন্দর কর্তৃপক্ষ সময় বাড়িয়ে ৪ মে নির্ধারণ করে। এবার অনেক ভালো সাড়া এসেছে। পণ্যছাড়ের এই গতিকে বাড়াতে নতুন আদেশ আসলো।

উল্লেখ্য, স্বাভাবিক সময়ে জাহাজ থেকে পণ্যবাহী কন্টেইনার নামানোর পর চার দিন পর্যন্ত মাশুল ছাড়াই কন্টেইনার বন্দরে রাখা যায়। এরপর প্রথম ধাপে প্রতি কন্টেইনার ছয় মার্কিন ডলার। শেষ ধাপে ২৪ মার্কিন ডলার করে ভাড়া দিতে হয়। এখ বন্দরে থাকা ৪৫ হাজার একক কন্টেইনার রাখার সব মাশুল থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বঞ্চিত হবে। কিন্তু বন্দর সচল রাখার স্বার্থে রাজস্ব আয় বাদ দিয়ে কঠিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।