আজ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে ভারতের কাছে হেরেই। তাই আজকের ম্যাচটি কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। আর সে ম্যাচটি জিতে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন টাইগার দলপতি মাশরাফি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের শেষেই। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে সে ম্যাচের আগেই কিনা নিজেকে আড়াল করে রাখলেন মাশরাফি। অথচ অনুশীলন কিংবা সংবাদ সম্মেলন কোথাও নেই অধিনায়ক । কেন এভাবে নিজেকে আড়াল করে রাখলেন মাশরাফি। এমনিতেই এবারের বিশ্বকাপটা মোটেও সুখকর নয় মাশরাফির জন্য। খালি চোখে সবাই দেখছেন, মাশরাফি ফর্মে নেই। এই বিশ্বকাপে যে মাশরাফিকে দেখা যাচ্ছে, সেটা যেন মাশরাফির ‘ছায়া’। যার সাথে তার, মেধা, মান, জাত-পাতের কোনই মিল নেই। ৭ ম্যাচে নামের পাশে একটি মাত্র উইকেট। তারচেয়ে বড় কথা, ওই সাত ম্যাচে একবার মাত্র ১০ ওভারের কোটা পূর্ণ করতে পেরেছেন টাইগার দলপতি । মাঠে তার নড়াচড়াও তুলনামূলক কম। শরীরি অভিব্যক্তিতেও অন্য সময়ের মত আর গতি নেই। কেমন যেন একটা নিস্পৃহতা।
বলা হচ্ছে মাশরাফি শতভাগ সুস্থ নন। সবাই জানেন হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি নিয়েই খেলছেন। তবে সেটা অনেক বেশি মাত্রার হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি। যাকে বলা হয় গ্রেড ‘টু’। যা নিয়ে খেলছেন বিশ্বকাপে। তার জীবনের শেষ বিশ্বকাপ। এমন ইনজুরি নিয়ে বিশ্বকাপ খেলার প্রশ্নই আসে না। এরকম ইনজুরির প্রথম চিকিৎসা হচ্ছে অন্তত তিন সপ্তাহ পূর্ণ বিশ্রাম। কিন্তু মাশরাফি আর তা নিতে পারলেন কই? ইনজুরি নিয়ে খেলার কারণে প্র্যাকটিসেও ম্যুভমেনট কম। গতকাল যেমন প্র্যাকটিসই করলেন না। বোলিং, ফিল্ডিং আর ক্যাচিং, এমনকি ফুটবল খেলাতেও দেখা যায়নি মাশরাফিকে। বিশ্বকাপে নিজের জীবনের শেষ ম্যাচের আগে মাশরাফিকে অনুশীলনে না দেখে অবাক সবাই।
আগেই বলা হয়েছে বিশ্বকাপে এটাই শেষ ম্যাচ বাংলাদেশের। সেমিফাইনালে উঠতে না পারার কারণে লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা টাইগারদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়মরক্ষার ম্যাচ হিসেবে। তবে শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, এই ম্যাচটা টাইগারদের দলনেতা মাশরাফি বিন মর্তুজার জন্যও হয়ে দাঁড়িয়েছে তার বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ হিসেবে। বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগেই মিরপুরে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলেন, এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। সে হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচটি মাশরাফির ক্যারিয়ারেরই শেষ ম্যাচ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফির পরিবর্তে কথা বলতে এলেন দলীয় কোচ স্টিভ রোডস। তিনিই দলের পরিকল্পনার কথা জানান এবং সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিলেন। কিন্তু কেন এভাবে নিজেকে আড়াল করে রাখলেন সে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মাঝে। তাহলে কি মাশরাফি বিশ্বকাপের শেষ লগ্নে এসে নিজেকে প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে দিতে চাননা। নাকি নিজের অফ ফর্মেল কারণে কথা শুনতে হবে বলে এলেননা সংবাদ সম্মেলনে। তবে কারণ যাই হোক মাশরাফি নিজেও খুব একটা স্বস্তিতে নেই সেটা বলাই যায়। একেতো স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেছে। তার উপর কেবলই দলে তার ভূমিকাটা ছিল যেন বেড়াতে যাওয়ার মত। বল হাতে রান দিয়েছেন অকৃপণ ভাবে। উইকেট নেই একটার বেশি। তাই শেষ দিকে কি বলবেন সাংবাদিকদের। সে কারণেই হয়তো নেই সংবাদ সম্মেলনে। আর অনুশীলন করেনি হয়তো এমনিতেই হাঁটুর অবস্থা ভাল না সেখানে অনুশীলন করে আবার যদি খেলতে না পারেন তাহলে কি হবে। সে ঝুঁকি নিতে চাননি হয়তো টাইগার দলপতি।