সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও: কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২১ টি বাসা বাড়ি ও১০ টি দোকানপাট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
১ মার্চ শনিবার ভোররাতে বাজারের মাছ বাজার ও তৎসংলগ্ন কলোনিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা ব্যাপী চলেছে এ অগ্নিকাণ্ড। নজরুল কলোনির একটি বাসার গ্যাস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। রাত সাড়ে তিনটার পর শুরু হলেও সকাল সাতটার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। অগ্নির লেলিহান শিখা থেকে রক্ষা পায়নি রমিজের মোটর বাইক, জীবন্ত নারীকেল, নিম ও বড়ই গাছও। পুড়ে গেছে বিপুল সংখ্যক ব্রয়লার মুরগি, তরি- তরকারি, কাঁচা ও শুকনো মাছ রাখার নানা যন্ত্রপাতি। যেগুলো পবিত্র মাহে রামাদান উপলক্ষে মজুদ করা হয়। উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস না থাকায় এবং বাজারে নিত্য যানজট হওয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা অনেক বেশি ছিল বলে জানায় ব্যবসায়ীরা।
কলোনির মালিক নজরুল ইসলাম জানান, তার কলোনিতে একটি অফিস ঘর সহ ১০ টি বাসা বাড়ির সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তার পার্শ্ববর্তী রশিদ আহমদের মালিকানাধীন কলোনির ১১টি ভাড়া বাসাও পুড়ে যায়। সব মিলিয়ে তিনি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে জানান। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রশাসনের তাৎক্ষণিক সহযোগিতা দাবি করেন।
মাছ বাজার ভাই ভাই একথা সমিতির সভাপতি শওকত আলম জানান, গভীর রাতে মোবাইলে লাইভে অগ্নিকাণ্ড দেখে তিনি দ্রুত মাছ বাজারে আসেন। উপস্থিত লোকদের নিয়ে ড্রেনের পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। শত চেষ্টা করেও মাছ বাজারের পশ্চিমাংশ তারা রক্ষা করতে পারেননি।
তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডে বৈদ্যুতিক মিটার, ভালব, ব্যারেল, আইপিএস, বাস্কেট, ককসীট, চেয়ার, টুল, তক্তা ও গাছ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে।
মুরগি দোকানদার জাহাঙ্গীর আলম জানান, দেশি, সোনালী, লাল ও ব্রয়লার মুরগী মিলে তার দোকানের ছয়শ মুরগি পুড়ে গেছে। জীবন্ত অনেক মুরগি লুটপাট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মধ্যে মুরগি, শুটকি, কাঁচা মাছ, তরকারি, মুদি ও মাছ কাটার দোকান ছিল।
ভুক্তভোগী দোকানদারদের মধ্যে ইসলাম, রমিজ, মৃদুল, রূপয়, সুজন, সুমন ও দিল মোহাম্মদ প্রমুখ রয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানী আবু তাহের জানান, রমজান উপলক্ষে ভাড়া বাসায় রাখা ২০-২৫ হাজার টাকার কোমল পানীয় সহ বাসার সবকিছু পুড়ে গেছে।
ফিস কাটার সুজন দাস জানান, দোকানের চাল পুড়ে যাওয়ায় পাঁচ /ছয় হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মাছ কাটা শ্রমিক সুমন দাসও তার দোকানের জিনিসপত্র পুড়ে গেছে বলে জানায়। তবে তারা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুনঃনির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছিল।
তরকারি দোকানদার জয়নাল, শাহজাহান ও ইউসুপ (বাপ্পি) অগ্নিকান্ডে তাদের কাঁচামাল মাল পুড়ে যায় বলে জানায়।
এদিন সকাল ৯ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা, থানার অফিসার ইনচার্জ মুসিউর রহমান ও বাজার সভাপতি শাহনেওয়াজ মিন্টু,
জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর তাজ জনি ও ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল হুদা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।