পৌনে ৪০০ রানের টার্গেট দিয়েও স্বস্তিতে থাকতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের ৩৭৩ রানের জবাবে পাকিস্তানের ইনিংস থেমে গেলো ৩৬১ রানে। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে ১২ রানে জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে বাতিল হয়েছিল।
ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনের মাঠে রান উৎসবে মেতেছিল দুই দলই। সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরি পেয়েছে উভয় দল। ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতল, কিন্তু উভয় দলের ব্যাটিং সমান প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। বিশ্বকাপে রান উৎসবের আগাম প্রস্তুতি যেন সেরে নিল ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে ইংল্যান্ড। তাদের ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল ইংলিশরা। সেই ধারাবাহিকতা রাখল তারা ৫০ ওভার পর্যন্ত। দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো হাফ-সেঞ্চুরি পেয়েছেন।
পরে জো রুট করলেন ৪০ রান। আর অধিনায়ক মরগান তার ব্যাটে ঝড় তুললেন। ৪৮ বলে খেললেন অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংসে। ব্যাটিং আনন্দ-উত্তেজনায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেল উইকেট কিপার জস বাটলারের সেঞ্চুরি।
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ৫০ বলে শত রান করেন বাটলার। আইপিএলের টি-টুয়েন্টির ফর্মটাই যেন ইংল্যান্ডে টেনে নিয়ে গেলেন তিনি। ৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি করার পর বাটলার ব্যাটকে যেন তলোয়ার বানিয়ে পাকিস্তানের বোলিংকে ছিন্নভিন্ন করলেন! পরের ৫০ রান করতে খেললেন মাত্র ১৮ বল! সবমিলিয়ে ৫৫ বলে করলেন অপরাজিত ১১০ রান। ৯ ছক্কা ও ছয় বাউন্ডারিতে তার এই ১১০ রান বাটলারের। এতে ইংল্যান্ডের রানের চাকা গিয়ে থামল ৩৭৩ রানে।
বিশাল এই টার্গেটের পিছনে ছুটতে গিয়ে পাকিস্তানও তাদের ব্যাটিং শক্তির জানান দিল। পাকিস্তানিদের আফসোস, সবই ঠিক ছিল, শুধু ফিনিসিংটা ছাড়া।
ম্যাচ জিততে ৩৭৪ রানের দরকার ছিল পাকিস্তানের। ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালে পাকিস্তানের নার্ভাস হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু পাকিস্তান চ্যালেঞ্জটা নিল। ১৪ দশমিক ২ ওভারে ওপেনিং জুটিতে তোলে তারা ৯২ রান।
বলা হয়, পাকিস্তানি ওপেনার ফখর জামান ইংল্যান্ডের মাটিতে ব্যাটিংটা বেশ পছন্দ করেন। তাই তো ১০৬ বলে ১৩৮ রানের ইনিংস খেলে সেই প্রমাণটা আরেক বার রাখলেন এই ওপেনার। তার সঙ্গে মিডলঅর্ডারে বাবর আজম ও আসিফ আলীও ব্যাটিং উৎসবে মাতলেন। দুজনেই হাফ-সেঞ্চুরি করে আউট হন। এক সেঞ্চুরি ও দুই হাফ-সেঞ্চুরিতে ততক্ষণে ম্যাচ জয়ের পথে পাকিস্তান।
শেষ পর্যন্ত তীরে এসে তরী ডুবল পাকিস্তানের। আবারও প্রমাণিত হলো- বিশাল রান তাড়া করে ম্যাচ জিততে হলে শুধু ভালো শুরু বা মাঝের সাহসী ব্যাটিংয়েই কাজ হয় না, ফিনিসারও লাগে। সেই ফিনিশারের দায়িত্ব নিতে পারল না পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যান।
এক পর্যায়ে ম্যাচ জিততে পাকিস্তানের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১৮ বলে ৩২ রানের। হাতে অক্ষত পাঁচটি উইকেট। কিন্তু পাকিস্তান-ভক্তদের হতাশ করে দিয়ে ডেভিড উইলি ও লিয়াম প্লাঙ্কেটের বোলিংয়ের সামনে সেই বাধা পার করতে পারেনি পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা।
ম্যাচের ৫০তম ওভারে টার্গেট ছিল ১৯ রানের। ক্রিস ওকসের করা সেই ওভার থেকে পাকিস্তান ছয় রানের বেশি তুলতে পারেনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড: ৩৭৩/৩ (৫০ ওভারে, রয় ৮৭, বেয়ারস্টো ৫১, রুট ৪০, মরগান ৭১*, বাটলার ১১০*, ইয়াসির শাহ ১/৬০)। পাকিস্তান: ৩৬১/৭ (৫০ ওভারে, ফকর জামান ১৩৮, বাবর আজম ৫১, আসিফ আলী ৫১, সরফরাজ ৪১*, উইলি ২/৫৭, প্লাঙ্কেট ২/৬৪, রশিদ ১/৮১, মঈন ১/৬৬)। ফল: ইংল্যান্ড ১২ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: জস বাটলার।
Share to MessengerShare to WhatsAppShare to TwitterShare to Print