পণ্যবাহী ট্রাকের দখলে থাকে শাহ্ আমানত সেতুর দক্ষিণপাড়!

জে,জাহেদ:
চট্টগ্রাম নগরীর প্রবেশদ্বার দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় একমাত্র সংযোগ গড়ে তোলে শাহ্ আমানত তৃতীয় সেতু (নতুনব্রীজ)। সন্ধ্যার পর হতে এ সেতুর দক্ষিণপ্রান্তের দু’পাশ তথা আরাকান মহাসড়কটি এস আলম গ্রুপ, ডায়মন্ড সিমেন্ট, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, মর্ডান পলি ও বিভিন্ন মিল কারখানা এবং শিল্পকারখানার মাল বোঝাই বড় বড় ট্রাকের দখল থাকে।
ফলে প্রশস্ত মহাসড়কটি সরু হয়ে যায় এবং যান চলাচলে বিঘœ ঘটে। এর সময় তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় রমজানেও নানা দূর্ঘটনাও ঘটে থাকে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টা হতে রাত ১১টা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কর্ণফুলী সেতুর দক্ষিণপাড় ও শহরের প্রবেশ পথ। ট্রাকের এই অবৈধ পার্কিং এ- প্রায় প্রতিরাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় সড়কে।
তাছাড়া যানজটের সময় কর্ণফুলী এলাকার কোন মুর্মুষ রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেতুতে অনেক সময় লেগে যায়। যদিও সেতু ব্যবস্থাপনা কতৃপক্ষ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবিষয়ে তদারকি করছে দাবি করলেও অনেক সময় ট্রাক এবং কার্গোগুলো সড়ক থেকে সরানো সম্ভব হয় না।
গত কয়েক মাস যাবত এ দৃশ্য যেনো এখন নিত্যদিনের। এতে সাধারণ যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেতুর উপর গাড়িতে বসে অপেক্ষা করতে হয়। যানজটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক সময় এতে জরুরি প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিস এর গাড়ি ও রোগী নিয়ে আসা এ্যাম্বুলেন্স ও রেহায় পায় না।
যাত্রী ও স্থানীয় পথচারীরা জানান, কক্সবাজার-ঢাকা ও ঢাকা-কক্সবাজার এমনকি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও কক্সবাজার-চট্টগ্রাম আসার প্রবেশ মুখে পড়ে শাহ্ আমানত তৃতীয় সেতু। এ সেতুর মুল কাজ চট্টগ্রাম শহর ও দক্ষিণ জেলার যোগাযোগ রক্ষা করা । দক্ষিণ পাড়ে গড়ে উঠা অপরিকল্পিত শিল্পাঞ্চলের পণ্যবাহী ট্রাকের ফলে এমনটি ঘটছেবলে মন্তব্য করেন তাঁরা।

শাহ্ আমানত তৃতীয় সেতু তথা নতুন ব্রীজের অপর পাশেই কর্ণফুলীতে গড়ে উঠেছে বড় বড় শিল্প কারখানা, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি সহ জাহাজ নির্মাণের ডকইয়ার্ড। এসব মিল কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়ার প্রধান রাস্তা যদি ট্রাক দিয়ে দখল থাকে। তাহলে শত শত কর্মঘন্টা সড়কেই নষ্ট হচ্ছে বলে ধারণা। এমনকি সঠিক সময়ে কাজে পৌঁছাতে পারেনা শহরে কর্মমুখী নানা মানুষ। মৃদু অভিযোগ রয়েছে, এসব সমস্যা দেখেও দেখছেনা সেতু ব্যবস্থাপনায় থাকা কর্মকর্তা কর্মচারীগণ।
একদিকে শহরমুখী বাস মাঝখানে কর্ণফুলী নদী আর অন্যদিকে সেই মালামাল বোঝাই ট্রাকের কারণে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিসহ হাজারো যানবাহনে থাকা সাধারণ যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই।
যদিও ট্রাফিক পুলিশ ও সেতু ব্যবস্থাপনা কতৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এসব ট্রাক পার্কি করলেও চট্টগ্রাম মেট্টাপলিটন ট্রাফিক পুলিশও এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খাচ্ছে বলে জানান মইজ্জ্যারটেক ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) মিজানুর রহমান। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার।
অপর দিকে জানতে চাইলে সেতুর টুলপ্লাজার তত্বাবধানে থাকা অপারেশন ডাইরেক্টর অপুর্ব সাহা বলেন, ‘আসলে আমার আসা যাওয়ার পথে কখনো চোখে পড়েনি যে ট্রাক দাড়িয়ে থেকে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে। যদি এ রকম হয়ে থাকে দুঃখজনক আমি খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
এ ব্যাপারে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ জানান, ‘যানজট বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মেট্টোপলিটন ট্রাফিক পুলিশ ও কর্ণফুলী থানা পুলিশকে সরকারি রাস্তা দখল মুক্ত রাখতে নির্দেশনা ও যোগাযোগ করা হচ্ছে দ্রুতই জনগণ সুফল পাবেন।’