ক্যান্সারের নতুন ওষুধে চমক

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, প্রাণঘাতি ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কার করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন তারা। গবেষকদের দাবি, কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৮ জন রোগীকে প্রায় ছয় মাস ধরে ডোসটারলিমাব নামের একটি ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। এই ওষুধের প্রভাবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রত্যেক রোগীই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

গবেষকরা জানান, ডোসটারলিমাব এমন একটি ওষুধ, যেটিতে গবেষণাগারে তৈরি মলিকিউলস রয়েছে। এই মলিকিউলস মানুষের শরীরে বিকল্প অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে। পরীক্ষামূলকভাবে ১৮ জন ক্যানসার রোগীর ওপর ডোসটারলিমাব ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছিল। গবেষণায় অংশ নেওয়া রোগীরা কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ছয় মাস ধরে প্রতি তিন সপ্তাহ পরপর ওষুধটি প্রয়োগের পর তাদের শারীরিক পরীক্ষায় দেখা যায়, সবাই ক্যান্সারমুক্ত হয়েছেন। ওষুধটি প্রয়োগের পর কারও শরীরে টিউমারের অস্তিত্ব ছিল না। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কোলন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অ্যালান পি ভেনোক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ওষুধ প্রয়োগের পর প্রত্যেক রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা অভাবনীয়। এমনকি ট্রায়ালে অংশ নেওয়া রোগীরা উল্লেখযোগ্য কোনো শারীরিক জটিলতার শিকার হননি। এটা অবশ্যই বিশাল অর্জন। অবশ্য, ওই গবেষকরাই বলেছেন- শতভাগ সাফল্য পাওয়া গেলেও এই পরীক্ষা খুবই অল্পসংখ্যক মানুষের ওপর চালানো হয়েছে। তাই আরও বড় পরিসরে ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে হবে।

একই কথা বলেছেন চট্টগ্রামের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ বলছেন, এটি নিয়ে আরো বিশদ গবেষণার প্রয়োজন আছে। আরো বেশি সংখ্যক রোগীর উপর ট্রায়ালের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আলী আজগর চৌধুরী বলছেন, একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের মাঝে ওষুধটি চমৎকার ফল দিয়েছে। তাও খুব কম সংখ্যক। যদিও এসব রোগীকে ফলোআপে রাখতে হবে। আরো ২ থেকে ৫ বছর পর এসব রোগীর প্রকৃত অবস্থা বলা যাবে। এ বিষয়ে আরো বিশদ স্টাডির দরকার আছে বলেও মন্তব্য করেন ডা. আলী আজগর চৌধুরী।