বিশ্বজুড়ে এখন নবায়নযোগ্য শক্তির জয়জয়কার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে সৌরশক্তি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ। কোনো কোনো দেশ এখন প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের সিংহভাগ জোগাড় করছে এ মাধ্যম থেকে। এজন্য তারা মরুভূমি কিংবা সাগরজুড়ে বসাচ্ছেন সৌর প্যানেল।
কারভের নতুন সৌর প্যানেল
তবে সৌরপ্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন ব্যয়বহুল তেমনি বিশাল জায়গা এবং প্রচুর সূর্যালোকের প্রয়োজন হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা মেঘাচ্ছন্ন দিনে উৎপাদন অনেকটাই কমে যায়। এসব সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়া ফিলিপাইনের এক শিক্ষার্থী। তিনি এমন এক ধরনের সোলার প্যানেল তৈরি করেছেন, যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সূর্যালোকের প্রয়োজন হবে না। অন্তত সরাসরি তো নয়-ই। এ ধরনের প্যানেল তৈরির খরচও অনেক কম।
ফিলিপাইনের মাপুয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী কারভে ইহরেন মাইগু এমন ধরনের কিছু সৌর প্যানেল তৈরি করেছেন, যা সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি শোষণের জন্য ডিজাইন হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, এগুলো মেঘাচ্ছন্ন দিনেও শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম।
নিজের তৈরি সৌর প্যানেল হাতে কারভে ইহরেন মাইগু
কারভের তৈরি সৌর প্যানেলগুলো সরাসরি সূর্যালোক ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। অরেস (AURES) নামের এই প্যানেলের প্রাচীর এবং জানালাগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ফল ও উদ্ভিজ্জ বর্জ্য থেকে প্রাপ্ত আলোকিত কণা (লুমিনিসেন্ট পার্টিকল) ব্যবহার করা যায়। এ প্রযুক্তিতে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি দৃশ্যমান আলোতে পরিণত করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে আলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। কারভের ৩ ফুট বাই ২ ফুট স্ট্রাকচারে তৈরি করা সৌরপ্যানেল থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে, তা দুটি ফোন চার্জ করার জন্য যথেষ্ট হবে।
প্রকল্পের সারাংশ অনুসারে, অরেস নামের এই সোলার প্যানেল সৌর শক্তিকে সকলের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। একইসাথে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট ফসলের বর্জ্য থেকে এ প্যানেল তৈরির মাধ্যমে কৃষকের ক্ষতি হ্রাস করা এবং খাদ্যের বর্জ্য ও এর উচ্চ কার্বন নির্গমন দূর করাও অন্যতম লক্ষ্য।
কারভে জানান, এ পর্যন্ত ৭৮ ধরনের স্থানীয় ফসলের উপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে নয়টিতে উচ্চ সম্ভাবনা দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, নতুন ধরনের সৌর প্যানেলের অভিনব এই ধারণাটি সাসটেইনেবিলিটি অ্যাওয়ার্ডও জিতেছে। ২৭টি দেশের ১৮০০টি প্রযুক্তির মধ্যে কারভের প্রকল্পটি জেমস ডাইসন অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়।











